বিশ্বব্যাংকের অবশেষে ঢাকা অফিস দু’টি গাড়ি শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরে হস্তান্তর করেছে। শুল্কমুক্ত সুবিধা নিয়ে তাদের দু’জন সাবেক কর্মকর্তা এ দু’টি গাড়ি ব্যবহার করতেন। কিন্তু ওই কর্মকর্তারা বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার সময় এসব গাড়ি হস্তান্তর করে যাননি। এ কারণে শুল্কমুক্ত সুবিধায় নিয়ে আসা গাড়ি অপব্যবহারের অভিযোগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর থেকে এক সপ্তাহের সময় দিয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসকে নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। এর পাঁচ দিনের মাথায় তারা দু’টি গাড়ি জমা দিয়ে যান। বাকিগুলোর ব্যাপারেও শিগগিরই তারা জবাব দেবেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ‘সোমবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশের কান্ট্রি অফিস থেকে গাড়ি দু’টি শুল্ক গোয়েন্দার সদর দফতরে এসে হস্তান্তর করে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের কর্মকর্তারা। এ গাড়ি দু’টির ব্যবহারকারী ছিলেন ফিনল্যান্ডের নাগরিক মির্ভা তুলিয়া ও ভারতীয় মৃদুলা সিং। মির্ভা তুলিয়া গত বছরের ডিসেম্বরে এবং মৃদুলা সিং ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন।’
আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ ছাড়ার আগে তাদের ব্যবহৃত কাস্টমস পাশবুক ও তাদের ব্যবহৃত গাড়ি দু’টি কাস্টমস কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করে যাননি। বাংলাদেশে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিদেশি সংস্থায় কর্মরত প্রিভিলিজড পারসনদের শুল্কমুক্ত সুবিধার অপব্যবহার সংক্রান্ত চলমান তদন্তের প্রয়োজনে শুল্ক গোয়েন্দা সদর দফতর থেকে বিশ্বব্যাংক বরাবর এ ধরনের ১৬টি গাড়ির তথ্য চেয়ে গত ১৫ জানুয়ারি নোটিশ পাঠায়।
মইনুল খান আরও জানান, ‘নোটিশ পাঠানোর পর বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিস থেকে গতকাল রবিবার উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল শুল্ক গোয়েন্দা দফতরে উপস্থিত হয়ে তাদের পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। আলোচনার পর বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান বিশ্বব্যাংকের পক্ষে গাড়ি দু’টি সোমবার সকালে শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন।’
মির্ভা তুলিয়া ২০১২ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৬ সালের আগস্ট পর্যন্ত বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে কমিউনিকেশনস স্পেশালিস্ট হিসেবে এবং মৃদুলা সিং ২০১৩ সালের মার্চ থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট স্পেশালিস্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বাংলাদেশে থাকা অবস্থায় তারা ব্যক্তিগত ব্যবহারের উদ্দেশ্যে এই গাড়ি দু’টি শুল্কমুক্ত সুবিধায় কিনেছিলেন।
গাড়ি দু’টি বর্তমানে শুল্ক গোয়েন্দার সদর দফতরের হেফাজতে রাখা হয়েছে। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে গাড়ি দু’টির বিষয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান মইনুল খান।