বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া রাষ্ট্রীয় প্রটোকলে না থাকলেও প্রথম প্রহরে বিশেষ ব্যবস্থায় শহীদ মিনারে ফুল দিতে চান। তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থার দাবি জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সঙ্গে দেখা করেছে দলটির একটি প্রতিনিধি দল।
বিএনপি নেতারা ঢাকাটাইমসকে বলেছেন, তাদের দলের নেত্রীর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে বলে উপাচার্য তাদেরকে জানিয়েছেন। তবে উপাচার্য ঢাকাটাইমসকে বলেছেন, এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
নিয়ম অনুযায়ী, ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে সবার আগে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি। এরপর প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা ও মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা শ্রদ্ধা জানাবেন। এরপর যাবেন কূটনীতিক। এরপর সুযোগ পাবে বিভিন্ন দল ও সংগঠন।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সার্বিক তত্ত্বাবধান করে থাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ২১ ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকেন উপাচার্য।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জনের পর রাষ্ট্রীয় কোনো প্রটোকল নেই খালেদা জিয়ার। ফলে জাতীয় দিবসগুলোতে শ্রদ্ধা জানাতে বিশেষ কোনো নিরাপত্তা বা সুবিধা ছাড়াই যেতে হয় শহীদ মিনার বা স্মৃতিসৌধে।
২০১৬ সালের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনার মধ্যে পড়েন খালেদা জিয়া। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে তার উপস্থিতিতেই ধাক্কাধাক্কি হয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের। সেই অভিজ্ঞতা যেন এবার না হয়, সে জন্যই বিশেষ সুযোগ চেয়ে উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিকীর কাছে গিয়েছিলেন বিএনপি নেতারা।
এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, নাজিম উদ্দিন আলম, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী।
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান ঢাকাটাইমসকে জানান, প্রথম প্রহরে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বেগম খালেদা জিয়া সর্বোচ্চ ৬০ জন নেতা-কর্মী নিয়ে ফুল দিতে পারবেন বলে তাদেরকে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে তারা চেয়েছিলেন, খালেদা জিয়ার সঙ্গে যাবেন ১০০ জন নেতা-কর্মী।
যদিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ঢাকাটাইমসকে বলেছেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
বিএনপির উদ্বেগের কারণ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার একটি বক্তব্য। সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাংবাদিকদেরকে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেত্রী ও মন্ত্রিপরিষদের সদস্য এরপর কূটনীতিকেরা প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এছাড়া কেউ দোয়েল চত্বর দিয়ে শহীদ মিনারে আসতে পারবেন না।’
দোয়েল চত্বর দিয়ে শহীদ মিনারে যেতে না পারলে খোলা থাকে পলাশীর মোড়। তবে এই মোড় থেকে বাকি পথ যেতে হয় হেঁটে। হাঁটুতে সমস্যা থাকায় খালেদা জিয়ার পক্ষে এটা খুবই কষ্টকর।