এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়েনটাই জ্যাং (বাসস) মোট দেশজ আয়ের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন । এজন্য বিনিয়োগের পরিবেশ নিশ্চিত করতে অবকাঠামোখাতের উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে উন্নত সড়ক ব্যবস্থা গড়তে হবে। আঞ্চলিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয় ও নজর রাখতে হবে। আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশের উন্নয়নে এডিবি ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা দেবে বলে তিনি জানান।
তিন দিনের বাংলাদেশ সফর শেষে বৃহস্পতিবার ঢাকায় এডিবি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এডিবি ভাইস প্রেসিডেন্ট এ সব কথা বলেন। সে সময় এডিবির ঢাকা আবাসিক মিশনের প্রধান কাজুহিগো হিগুচিসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ওয়েনটাই জ্যাং বলেন, আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশর উন্নয়নে ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা দেবে এডিবি। সংস্থাটি গত বছর বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ১২০ কোটি ডলার দিয়েছে। এ বছর এই সহায়তার পরিমাণ ১৮০ থেকে ২০০ কোটি ডলারে উন্নীত হবে।
চলতি অর্থবছর বাংলাদেশে জিডিপির ৬ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে মনে করেন এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, সরকার ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এ বছর ৬ দশমিক ৯ ভাগ প্রবৃদ্ধি হতে পারে বলে মনে করে এডিবি। গত কয়েকবছর ধরেই এখানে ধারাবাহিকভাবে ৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
ওয়েনটাই জ্যাং বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে উন্নত সড়ক ব্যবস্থা গড়তে হবে। প্রবৃদ্ধির চালিকা হলো বিনিয়োগ। এজন্য সরকারি বিনিয়োগের পাশাপাশি বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
হলি আর্টিসানে জঙ্গি হামলার পর প্রকল্প বাস্তবায়ন এলাকা ও উন্নয়ন সহযোগীদের কার্যলয়ে নিরাপত্তা জোরদার করায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন এলাকায় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। এখানে প্রতিবছরই বন্যা জলোচ্ছ্বাস হয়। এ ধরনের বিরূপ প্রভাব কমিয়ে আনতে এডিবি সহায়তা অব্যাহত রেখেছে।
প্রকল্প পরিদর্শনে নিজের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে ওয়েনটাই জ্যাং বলেন, ‘চলতি সফরে মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল পরিদর্শন করেছি। সেখানে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের সাথে কথা হয়েছে। তারা এখন ক্লাসে মাল্টিমিডিয়া ব্যবহার করছে। এখন প্রয়োজন তাদের তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া। গ্রামীণ সড়ক নির্মাণে সহায়তা করছে এডিবি। সেখানে রাস্তার দুপার্শ্বে সুন্দর গাছ দেখে আমি অভিভূত।’
এ ধরনের গ্রামীণ সড়ক ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে গ্রামীণ বাজার ব্যবস্থায় সাধারণ মানুষের সুবিধা বেড়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।