প্রতি বছর বিশ্বের প্রায় ৬০ লাখ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে তামাক ব্যবহারজনিত কারণে। এছাড়া, বর্তমানে এশিয়ার সবক’টি দেশই জিকা ভাইরাসের ঝুঁকিতে রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। গতকাল সংসদে প্রশ্নোত্তরপর্বে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। সরকারদলীয় এমপি নুরুন্নবী চৌধুরীর টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রতিবছর তামাক ব্যবহারজনিত কারণে প্রায় ৬০ লাখ লোক মৃত্যুবরণ করে। যার মধ্যে ৫০ লাখ সরাসরি তামাক ব্যবহারের কারণে এবং প্রায় ৬ লাখ পরোক্ষ
ধূমপানের কারণে মৃত্যুবরণ করে থাকে। মন্ত্রী আরো জানান, সারা বিশ্বের ১০০ কোটি ধূমপায়ীর মধ্যে ৮০ লাখ নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশের মানুষ। সরকার জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে ২০০৩ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণের আন্তর্জাতিক চুক্তি (ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল-এফসিটিসি’তে স্বাক্ষর করে এবং ২০০৪ সালে অনুস্বাক্ষর করে। এই চুক্তির বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী সরকার ২০০৫ সালে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫’ এবং ২০০৬ সালে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬ প্রণয়ন করে। মন্ত্রী জানান, দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকের স্বল্পতা কমানোর জন্য বর্তমান সরকার (২০০৯-২০১৬) ১৪ হাজার ৫ শ’ ৭৭ জন চিকিৎসক নিয়োগ দিয়েছে। অবসরজনিত ও উচ্চশিক্ষা গ্রহণের কারণে চিকিৎসকদের বেশকিছু পদ মাঝে মধ্যেই শূন্য থাকে। এসব শূন্যপদ পূরণের লক্ষ্যে বিসিএস’র মাধ্যমে আরো চিকিৎসক নিয়োগ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এদিকে প্রশ্নোত্তরে মন্ত্রী জানান, বর্তমানে এশিয়ার সবক’টি দেশ জিকা ভাইরাসের ঝুঁকিতে রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, জিকা একটি ভাইরাসজনিত রোগ। এটি এডিস মশার কামড়ে ছড়ায়। বিশ্বে এ পর্যন্ত মোট ৮৮টি দেশে জিকা ভাইরাস আছে বলে প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ব্রাজিল, বার্মাডোজ, বলিভিয়া, কলম্বিয়া, ডোমিনিকা রিপাবলিক, ইকুয়েডর, এলসালভাদর, গুয়েতেমালা, হাইতি, হন্ডুরাস, মেক্সিকো, পানামা, প্যারাগুয়ে, সুরিনাম, সামওয়া, ভেনিজুয়েলা, ইউএস ভার্জিন থাইল্যান্ড জিকা ভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা বেশি বলে উল্লেখ করেন তিনি। এছাড়া বর্তমানে এশিয়ার সবক’টি দেশই জিকা ভাইরাসের ঝুঁকিতে রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত কোন রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। তথাপি রোগটি নিয়ন্ত্রণে সরকার নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। দেশে কোনো অবস্থাতেই যাতে জিকা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি প্রবেশ করতে না পারে সে লক্ষ্যে স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে জিকা ভাইরাস শনাক্তকরণের জন্য সার্ভিলেন্স জোরদারকরণের অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন। সরকারদলীয় এম আবদুল লতিফের প্রশ্নে মন্ত্রী জানান, দেশে বিগত এক বছরে (১লা নভেম্বর ২০১৫ থেকে ৩১শে অক্টোবর ২০১৬ পর্যন্ত) সরকারি ও বেসরকারি ১২৮টি টেস্টিং সেন্টারের মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে নতুন ৫৭৮ জন এইডস রোগী শনাক্ত বা সন্ধান হয়েছে। বর্তমানে জাতীয় এইডস/এসটিডি কন্ট্রোল প্রোগ্রাম (এনএএসপি), স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সাধারণ জনগোষ্ঠী ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে সচেতনা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। চিকিৎসা সেবা ও এইচআইভি শনাক্তকরণ কার্যক্রম সরকারি ১২টি হাসপাতালের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। যার মধ্যে ৪টি সরকারি হাসপাতাল থেকে এইডস আক্রান্ত রোগীদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। ঢাকার মহাখালীতে অবস্থিত সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে ২৪ শয্যাবিশিষ্ট পৃথক ওয়ার্ডের মাধ্যমে এইচআইভি রোগীদের উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এইচআইভি এইডস প্রতিরোধে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য দেশব্যাপী সেরো-সার্ভেলেন্স ও বিহ্যাভিয়ারাল-সার্ভিলেন্স এবং বিভিন্ন ধরনের গবেষণা কার্যক্রম চলমান আছে বলেও উল্লেখ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
M | T | W | T | F | S | S |
---|---|---|---|---|---|---|
1 | ||||||
2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 |
9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 | 15 |
16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 | 22 |
23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 | 29 |
30 | 31 |