খোদ ছাত্রলীগ সাতকানিয়ায় ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে। এতে ১০ নেতা–কর্মী আহত হয়েছেন। এ সময় পুকুরে ফেলে দেয়া হয়েছে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার কেঁওচিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেঁওচিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্রলীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও কেক কাটার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ওসমান গনি সিকদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন, সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক হারেজ মোহাম্মদ, আবু ছালেহ শান ও মোস্তাক আহমদ। আলোচনা সভা চলাকালে দুপুর ১২টার দিকে কেঁওচিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের এক গ্রুপের সভাপতি মোহাম্মদ শফিউল আলম সোহেলের নেতৃত্বে ২০/২৫ জনের একটি দল অনুষ্ঠানস্থলে গিয়ে হামলা চালায়। এতে সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আবু ছালেহ শান (৩২), কেঁওচিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মঈন উদ্দিন (১৮), সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন (১৮), ওমর ফারুখ (২২), মাহাফুজুর রহমান (২০), মোস্তাক আহমদ (২৮), নুর হাসান (২৪), মঈন উদ্দিন নয়ন (২০), আবদুস ছবুর (১৯) ও শহীদুল ইসলাম (২০) আহত হন। আহতদেরকে সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে।
সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আবু ছালেহ শান বলেন, ‘কেঁওচিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্রলীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও কেক কাটার আয়োজন করা হয়। আমরা অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলাম। আলোচনা সভা চলাকালে মোহাম্মদ শফিউলের নেতৃত্বে ২০/২৫ জনের একটি দল লাঠি–সোটা নিয়ে সভাস্থলে এসে অতর্কিত হামলা চালায়, এমনকি তারা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আনা কেকটি পুকুরে ফেলে দেয়। এতে ছাত্রলীগের ১০ নেতা–কর্মী আহত হয়েছেন। আমি নিজেও আহত হয়েছি। বিষয়টি আমরা সিনিয়র নেতাদের জানিয়েছি। পরে নতুনভাবে আরেকটি কেক এনে অনুষ্ঠান শেষ করেছি।’
ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত কেঁওচিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের এক গ্রুপের সভাপতি মোহাম্মদ শফিউল আলম সোহেল বলেন, ‘ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিল বুধবার। ওই দিন আমরা প্রকৃত ছাত্রদের নিয়ে স্কুলে কেক কেটেছি। এলাকার কয়েকজন চিহ্নিত চাঁদাবাজ, অছাত্র ও মোবাইল চোর কেঁওচিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর নাম দিয়ে সভা করে কেক কাটতে চেয়েছিল। তখন ছাত্রলীগের সেখানকার কিছু নেতা–কর্মী ও বিদ্যালয়ের ছাত্ররা তাদেরকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। আর এই ঘটনার সাথে আমার কোন ধরণের সম্পৃক্ততা নেই।’
এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের অপর যুগ্ম আহ্বায়ক হারেজ মোহাম্মদ বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ ভাবে অনুষ্ঠান চলছিল। এসময় হঠাৎ শফিউলের নেতৃত্বে কিছু নেতা–কর্মী হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন নেতা–কর্মী আহত হয়েছেন।’
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ওসমান গনি সিকদার জানান, শফিউলের নেতৃত্বে নেতা–কর্মী নিয়ে অনুষ্ঠানে হামলা চালায়। পরে খবর পেয়ে সাতকানিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাদের সরিয়ে দিলে আমরা অনুষ্ঠান শেষ করি।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল হোসেন জানান, কেঁওচিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও কেক কাটার অনুষ্ঠানে অপর গ্রুপ হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় মোঃ ওমর ফারুখ বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।