চট্টগ্রাম, ০৫ জানুয়ারি ২০১৭ (সিটিজি টাইমস):: রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় কমে গেছে ইন্টারনেটের গতি। ইন্টারনেটের এই ধীর গতি আরো ১৫-২০ দিন থাকবে বলে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) সূত্রে জানা গেছে।
আইএসপিএবি সূত্রে জানা যায়, সমুদ্রের তলদেশে থাকা ফাইবার ক্যাবল নেটওয়ার্কের তার কাটা পড়ায় দেশে ইন্টারনেটের গতি কমে গেছে। সিঙ্গাপুর থেকে চেন্নাইয়ের দিকে ৫৬ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রের তলদেশে (সাবমেরিন) ফাইবার অপটিক তার বুধবার (৪ জানুয়ারি) কাটা পড়ে। এরপর থেকে বাংলাদেশ থেকে শুধু পশ্চিম দিক (ইউরোপ প্রান্ত) দিয়ে তথ্য (ডেটা) আদান-প্রদান চলছে।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক বলেন, এক মাস আগে কাটা পড়ে ভারতি এয়ারটেলের ‘আই ২ আই’ সাবমেরিন ক্যাবল। এছাড়া গত ডিসেম্বর মাসে সাইক্লোন ভার্দার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ‘আইমিউই’সহ ভারতের কয়েকটি সাবমেরিন ক্যাবল নেটওয়ার্ক। সর্বশেষ বুধবার কাটা পড়ে ভারতের টাটা ইনডিকম ক্যাবল বা টিআইসি। এসব কারণে ইন্টারনেটের গতি অনেক কমে গেছে। গতি স্বাভাবিক হতে ন্যূনতম ১৫-২০ দিন সময় লাগতে পারে।
ক্ষতিগ্রস্ত সাবমেরিন ক্যাবল মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে এমদাদুল হক বলেন, বুধবার কাটা পড়া টাটা ইনডিকম ক্যাবল বা টিআইসি ক্যাবলের মালিক ভারতীয় টাটা কোম্পানি। শুনেছি এটি ঠিক করার জন্য এখনো কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তবে এক মাস আগে কাটা পড়া এয়ারটেলের ‘আই ২ আই’ ক্যাবলটি ঠিক করার জন্য ভারত মহাসাগরের দিকে জাহাজ রওনা করেছে। এ লাইনটি ঠিক হলে দেশে ইন্টারনেটের গতি স্বাভাবিক হবে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত এসব ক্যাবল ঠিক করতে ন্যূনতম ১৫-২০ দিন সময় লাগে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা আশিকুর রহমান জানান, আগে বাফারিং ছাড়াই ইউটিউবে ভিডিও দেখতে পারতাম। কিন্তু গত দুই দিন ধরে ভিডিও দেখাতো দূরে থাক নিজের মেইল চেক করতে পারি না। শুধু লোডিং দেখায়। চারদিকে বলা হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ কিন্তু ইন্টারনেটের গতির কোন উন্নতি নাই।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের দৈনিক ইন্টারনেট ব্যবহার ৪০০ জিবিপিএস ছাড়িয়ে গেছে। ৪০০ জিবিপিএসের মধ্যে ১২০ জিবিপিএস নেয়া হয় বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) থেকে এবং ১৮০ জিবিপিএস নেয়া হয় ভারতের আইটিসি অপারেটরদের মাধ্যমে। অর্থ্যাৎ বাংলাদেশে ৭৫ শতাংশ ব্যান্ডউইথ নেয়া হয় আইটিসির মাধ্যমে। এই আইটিসি ব্যান্ডউইথ ভারতের টাটা কমিউনিকেশন এবং ভারতি এয়ারটেল নামে দুটি কোম্পানি বাংলাদেশকে দেয়। তাই ভারত মহাসাগরে কোনো সাবমেরিন ক্যাবল ক্ষতিগ্রস্ত হলে এর প্রভাব পড়ে বাংলাদেশে।