আইসিটি বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ তিন মেয়াদের রোডম্যাপ তৈরি করেছে। স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদের রোডম্যাপ ২০১৭ সালে প্রকাশ করা হবে।
আইসিটি বিভাগ জানায়, দুই বছর, পাঁচ বছর ও ১০ বছরকে মেয়াদ ধরে রোডম্যাপ তৈরি করছে আইসিটি বিভাগ। এরই মধ্যে হাইটেক পার্ক ও সিসিএ (কন্ট্রোলার অব সার্টিফাইং অথরিটি) তথা ডিজিটাল স্বাক্ষর কর্তৃপক্ষ তাদের তিন মেয়াদের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে। শিগগিরই অন্যান্য সংস্থা বা সংগঠনগুলোও এ বিষয়ে তাদের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে জমা দেবে বলে জানিয়েছে আইসিটি বিভাগের ওই সূত্র।
সূত্র উল্লেখ করে, দুই বছরের পরিকল্পনায় (২০১৮-১৯ অর্থবছর) রয়েছে অবকাঠামো নির্মাণের উদ্যোগ। এতে করে সিলেট ইলেকট্রনিক্স সিটি ও রাজশাহী বরেন্দ্র সিলিকন সিটির প্রাথমিক অবকাঠামো নির্মাণ শেষ হবে। বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি, সিলেট ইলেকট্রনিক্স সিটি, রাজশাহী বরেন্দ্র সিলিকন সিটি, ১২ আইটি পার্ক, চুয়েট এবং শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারে ১৭ দশমিক ৬৫ লাখ বর্গফুট ওয়ার্কস্পেস নির্মাণ করা হবে। এসব প্রকল্পে ২০ হাজার লোকের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে বলে জানা গেছে।
আরও জানা গেছে, পাঁচ বছরের (২০২১-২০২২) পরিকল্পনায় এসব জায়গায় আরও ১১ লাখ বর্গফুট ওয়ার্কস্পেসসহ মোট ২৮ দশমিক ৩৩ লাখ বর্গফুট ওয়ার্কস্পেস তৈরির কাজ শেষ হবে। এতে সব মিলিয়ে ৬০ হাজার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। সূত্র আরও জানায়, ১০ বছরের (২০২৬-২৭ অর্থবছর) আইটি ব্যবসাকে জনগণের কাছে সহজ করতে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এসটিপি বা আইটি পার্ক স্থাপন করবে। এছাড়া বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য আরও প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করবে এবং আইটি শিল্প উপযোগী নতুন নতুন অবকাঠামো নির্মাণ করবে। আইটি গ্র্যাজুয়েটদের উচ্চতর প্রশিক্ষণের আরও নতুন নতুন সুযোগও সৃষ্টি করবে।
সূত্র জানায়, এসব কর্মকাণ্ড সফলভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে এ শিল্পে অনুকূল পরিবেশ তৈরি হবে। তাতে তথ্যপ্রযুক্তির বিস্তার ঘটবে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং এ খাতে রফতানি আয় বাড়বে। ফলে ২০২০ সালের মধ্যে পাঁচ বিলিয়ন এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ১০ বিলিয়ন ডলার রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কর সম্ভব হবে।
অন্যদিকে সিসিএ তথা ডিজিটাল স্বাক্ষর কর্তৃপক্ষ তাদের তিন মেয়াদকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তিনটি ভাগে ভাগ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ডিজিটাল স্বাক্ষর সনদের প্রবর্তন, সাইবার নিরাপত্তা ও সমন্বয় এবং সাইবার অপরাধ তদন্ত ও ফরেনসিক ল্যাব প্রতিষ্ঠা।
আইসিটি বিভাগ সূত্রে আরও জানা গেছে, উদ্ভাবন, নকশা ও উদ্যোক্তা তৈরিতে একটি একাডেমি গড়ে তোলার উদ্যোগও নিয়েছে আইসিটি বিভাগ। একাডেমি ফর ইনোভেশন, ডিজাইন অ্যান্ড এন্টারপ্রেনারশিপ (আইডিয়া) নামে এই একাডেমিতে তথ্যপ্রযুক্তিপ্রেমীদের উদ্ভাবন, ডিজাইন বা নকশা প্রণয়ন ও উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২২৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বাজেটের এই প্রকল্পের মেয়াদ তিন বছর। ২০১৬ সালের জুলাই মাসে শুরু হয়ে শেষ হবে ২০১৯ সালের জুন মাসে। এ প্রকল্পটির মূল কাজ শুরু হবে নতুন বছরে।
আইসিটি বিভাগের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নিজেকে উদ্ধৃত না করে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এসব ছাড়াও নতুন বছরে ই-জুডিসিয়ারি প্রকল্প, বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম ডাটা সেন্টার নির্মাণ, অ্যাপস ও গেমিং ডেভেলপমেন্ট ইন্ডাস্ট্রি, মহেশখালীকে ডিজিটাল দ্বীপে রূপান্তর, ই-কমার্স নীতিমালা চূড়ান্তকরণ এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিধিমালা (তদন্ত) ২০১৬ প্রণয়নের কাজগুলো করা হবে।’