বাড়ছে না যাত্রী আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রুটে বিমানের যাত্রী পরিবহন ক্ষমতা যেভাবে বাড়ছে সেভাবে । ফলে যাত্রী টানতে বিমান সংস্থাগুলো কমিয়ে যাচ্ছে ভাড়া। এতে লাভের মুখ দেখছে না বিমান সংস্থাগুলো। যাকে এ শিল্পের জন্য অশনি সংকেত হিসেবে দেখছে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা।

ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর সাথে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য। সূত্র জানায়, যাত্রী টানতে ঢাকা-মাস্কাট রুটে এখন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার ৫০০টাকা। যা আগে ছিল ২৫,৬০০ টাকার মতো। ঢাকা-দোহা রুটে ভাড়া ছিল ২৯০ ডলার। বর্তমানে তা ২৩৫ ডলার। কিছুদিন আগেও দুবাইর ভাড়া ছিল ২৯০ ডলার। এখন ২২৫ ডলারে টিকেট পাওয়া যায়।

একই অবস্থা দেশের অভ্যন্তরীণ রুটেও। আভ্যন্তরীণ রুটে সবচেয়ে ভাড়া কম বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে। যার সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে গিয়ে বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলোকে ভাড়া হ্রাস করতে হয়েছে। দেশের সবচেয়ে ব্যস্ততম রুট ঢাকা-চট্টগ্রামে বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলোর এই পথে ভাড়া ছিল ৮ হাজার টাকা। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স হঠাৎ ভাড়া নির্ধারণ করে ৩,২০০ টাকা। এরপর বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলো এ রুটের ভাড়া নির্ধারণ করতে হয়েছে আরও কম। কোন কোন সংস্থা তাদের নিয়মিত সর্বনি¤œ ভাড়ার প্রায় অর্ধেক নির্ধারণ করতে হয়েছে প্রমোশন হিসেবে।

এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম এ প্রসঙ্গে বলেন, অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান সংস্থাগুলোর ক্যাপাসিটি বেড়ে গেছে প্রচুর। কিন্তু তারা যাত্রী পােেচ্ছ না। কম সংখ্যক যাত্রী নিয়ে তাদেরকে ফ্লাইট পরিচালনা করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে গিয়ে ভাড়া হ্রাস করতে হয়েছে। এটা যাত্রীদের জন্য ভাল হলেও বিমান পরিবহন শিল্পের জন্য ভাল নয়।

তিনি আরও বলেন, জনশক্তি রপ্তানি বাজারে মন্দার কারণে বাংলাদেশের সাথে বিভিন্ন আকাশপথে যাত্রীসংখ্যা অস্বাভাবিক হ্রাস পেয়েছে। শাহ আমানত থেকে কম সংখ্যক যাত্রী নিয়ে উড্ডয়ন করতে হয়। আবার ফিরতি যাত্রায় একেবারে প্রায় খালি চলে আসতে হয় মাস্কাটসহ বিভিন্ন স্থান থেকে। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশে জনশক্তি রপ্তানি একেবারে বন্ধ বা নামেমাত্র। ওমানেও হ্রাস পেয়েছে। এসবের জেরে আকাশপথের ব্যবসা মার খাচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিশেষত অফ-সিজনে অধিক সংখ্যক যাত্রী আকর্ষণের কৌশল হিসেবে বিভিন্ন বিমান সংস্থা সর্বনি¤œ ভাড়ায় পরিবহনের ঘোষণা দেয়। কার্যত এটা কোন কোন ক্ষেত্রে এক ধরনের ধোঁকাবাজি। যাত্রীদের এই দামের টিকেটের জন্য গিয়ে বিফল হয়ে ফিরতে হয়। সব টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে বলে জানানো হয়।

বিমান সংস্থার ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানায়, সর্বনি¤œ ভাড়ার টিকেট থাকে অতি নগন্য সংখ্যক। কার্যত ফ্লাইটে ৫ শতাংশের কম টিকেট থাকে সর্বনি¤œ মূল্যের। তাই সর্বনি¤œ ভাড়ার খবর পাওয়ার সাথে সাথে গেলেও অনেকেই আর টিকেট পান না।

বাংলাদেশে প্রথম বেসরকারি এয়ার লাইন্সের যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৬ সালে। এ্যারো বেঙ্গল নামের এই বিমান সংস্থাটির ব্যবসা দুবছরের মধ্যে গুটিয়ে নিতে হয়েছে। ১৯৯৭ সালে চালু হয় এয়ার পারাবাত; সেটাও বন্ধ হয়ে যায় ৫ বছরের মাথায়। ১৯৯৮ সালে ব্যবসা শুরু করে জিএমজি এয়ারলাইন্স। এরপর ২০০৫ সালে যাত্রা শুরু করে এয়ার বাংলাদেশ। আর ২০০৭ সালে চালু হয় রয়েল বেঙ্গল এয়ারলাইন্স এবং ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ। এর সবগুলোই বন্ধ হয়ে গেছে লোকসানের মুখে। বর্তমানে বেশ সফলতার সাথে চালু এয়ারলাইন্স হল রিজেন্ট এয়ার, ইউএস বাংলা, নভো এয়ার প্রভৃতি।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031