আজ সোমবার সকালে লাশ তোলার কথা থাকলেও ম্যাজিস্ট্রেট এর অনুপস্থিতির কারনে তা পিছিয়ে যায়। চট্টগ্রাম মহানগরে নির্মম নির্যাতনের শিকার গৃহবধু লুবনার লাশ পুন:ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে তোলা হবে কাল মঙ্গলবার।
গত ১৫ ডিসেম্বর পেটের একমাত্র সন্তান শিশু হুমায়রার জবানবন্দির পর কবর থেকে গৃহবধু লুবনার লাশ উত্তোলন করে পুন:ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। যার দায়িত্ব এসে বর্তায় পুলিশ ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (পিবিআই) ওপর।
পিবিআই সূত্র জানায়, গত ১৬ জুলাই চট্টগ্রামে শ্বশুর বাড়ীতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে গৃহবধু লুবনা আত্মহত্যা করে বলে জানায় শ্বশুড় বাড়ির লোকজন। কিন্তু লুবনার মায়ের অভিযোগ, লুবনাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। এ অভিযোগে মামলাও দায়ের করেন লুবনার মা।
মামলায় আদালতে জবানবন্দি দেন লুবনার ৪ বছরের সন্তান শিশু হুমায়রা। হুমায়রা আদালতকে জানান, তার সামনেই বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করা হয় তার মা লুবনা আকতারকে। পরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে কিভাবে ঝুলিয়ে রাখা হয় তার বিবরণ দেয় হুমায়রা।
হুমায়রার দেওয়া ১ মিনিট ৫ সেকেন্ডের জবানবন্দির পর আদালত গৃহবধু লুবনার লাশ কবর থেকে তোলে পুন:ময়নাতদন্তের জন্য নির্দেশ দেন। যার দায়িত্ব পিবিআইকে দেন আদালত। এর প্রেক্ষিতে আজ সোমবার সকালে ম্যাজিস্ট্রেট হারুনের নেতৃত্বে এ লাশ তোলার কথা। কিন্তু সঙ্গত কারনে তিনি উপস্থিত না থাকায় তা পিছিয়ে আগামিকাল মঙ্গলবার সকাল ৯ দিকে তোলা হবে লুবনার লাশ।
নিহত লুবনার মা রেহেনা আকতার অভিযোগ করেন, বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমার মেয়ের ওপর নির্মম নির্যাতন চালিয়ে আসছিলো। এ অবস্থায় গত ১৬ জুলাই শ্বশুর বাড়ীর লোকজন যৌতুকের জন্য নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যার পর গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখে।
পরে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে ডাক্তাররা লুবনাকে মৃত ঘোষনা করেন। তারা এটিকে আত্মহত্যা বলে প্রচার করে নগরীর চকবাজার থানাধীন কাজেম আলী স্কুল সংলগ্ন মিসকিন শাহ মাজার এলাকা কবরস্থানে লাশ দাফন করে ফেলে। পরে আমরা আমাদের নাতনি হুমায়রার মুখে জানতে পারি তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে।
হুমায়রার মুখে হত্যাকান্ডের বিবরণ শুনার পর গত ৬ নভেম্বর চট্রগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। আসামী করা হয় স্বামী মোহাম্মদ মাবুদুর রহমান সহ তার পরিবারের ৯ সদস্যকে।
নিহত লুবনার ছোট ভাই দাঈয়ান শরিফ সিটিজি টাইমস ডটকমকে বলেন, হত্যার দিন রাত ১১টা ১৫ থেকে ২২মিনিট পর্যন্ত আমর বোন লুবনার সাথে আমার মা মোবাইল ফোনে কথা বলে। আমার বোন জানায় তখন তার মেয়ে হুমায়রাকে পড়াতে বসিয়েছে। আর এটাই ছিল আমার বোনের সাথে আমাদের শেষ কথা। এরপর রাত ১২টা নাগাদ একটি অচেনা নাম্বার থেকে ফোন করে জানানো হয় আমার বোন আত্মহত্যা করেছে।