ডা. মুজিব–ডা. ফয়সল পরিষদ বহুল আলোচিত বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখার এবারের নির্বাচনে পূর্ণাঙ্গ প্যানেলে জয়লাভ করেছেন। এই পরিষদ বর্তমান সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের সমর্থনপুষ্ট ও অনুসারী। আর পরাজিত ডা. নাসির–মিনহাজ পরিষদকে সমর্থন দিয়েছিলেন সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী।
ভোট গণনা শেষে গতকাল দিবাগত রাত একটায় আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ডা. আলাউদ্দিন মজুমদার। নির্বাচনে ডা. মুজিব–ডা. ফয়সল পরিষদের পূর্ণাঙ্গ প্যানেলে জয়ের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন তিনি। এসময় নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব ডা. কল্যাণ বড়ুয়া, সদস্য ডা. সাইকুল ইসলাম ও ডা. জিএম মোচ্চফা সহ কমিশন সংশ্লিষ্ট অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। গতকালের নির্বাচনে এর আগে সকাল সাড়ে আটটায় শুরু হয়ে বিকেল ৫টায় ভোট গ্রহণ শেষ হয়। নির্বাচনে চট্টগ্রামের মোট ৪ হাজার ৪৪২ ভোটারের মাঝে ৩ হাজার ২৪৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। ৫টায় ভোট গ্রহণ শেষে সন্ধ্যা সাতটার দিকে শুরু হয় ভোট গণনা। আর দিবাগত রাত একটায় আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে– নির্বাচনে বিজয়ী প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী ডা. মুজিবুল হক খান পেয়েছেন ২ হাজার ১১৯ ভোট। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ডা. নাসির–ডা. মিনহাজ পরিষদের ডা. নাসির উদ্দিন মাহমুদ পেয়েছেন ১ হাজার ১২৭ ভোট। সভাপতি পদে এই দুই প্রার্থীর মাঝে ভোটের ব্যবধান ৯৯২ ভোট। এদিকে, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমানের চেয়ে ১ হাজার ৩০৯ ভোট বেশি পেয়ে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী। ডা. ফয়সল পেয়েছেন ২ হাজার ২৬৮ ভোট। বিপরীতে ডা. মিনহাজ পেয়েছেন ৯৫৯ ভোট।
অন্যদিকে, বিজয়ী প্যানেলের সহ–সভাপতি হিসেবে ডা. মনোয়ারুল হক শামীম ২ হাজার ৩৫৮ ভোট ও ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী ১ হাজার ৯৮১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী পরিষদের ডা. আবু মনসুর মো. নিজামুদ্দিন খালেদ ও ডা. মো. আব্দুর রউফ পেয়েছেন যথাক্রমে ৮২৬ ও ৮৪৯ ভোট। কোষাধ্যক্ষ হিসেবে বিজয়ী পরিষদের ডা. আরিফুল আমিন পেয়েছেন ২ হাজার ৪২৫ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডা. মো. সেলিম পেয়েছেন ৭১৯ ভোট।
যুগ্ম–সম্পাদক পদে বিজয়ী পরিষদের ডা. রবিউল করিম পেয়েছেন ২ হাজার ১৭৮ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ডা. মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ পেয়েছেন ৯০০ ভোট। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে বিজয়ী পরিষদের ডা. এস এম মুইজ্জুল আকবর চৌধুরী পেয়েছেন ২ হাজার ৫৭৭ ভোট। বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ডা. বিপ্লব পালিত পেয়েছেন ৫৯৭ ভোট। বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক পদে বিজয়ী পরিষদের ডা. নুর হোসেন শাহীন পেয়েছেন ২ হাজার ৫৭৩ ভোট। বিপরীতে ডা. সৌমেন পালিত পেয়েছেন ৬১৭ ভোট। দপ্তর সম্পাদক পদে বিজয়ী পরিষদের ডা. আবুল হোসেন শাহীন পেয়েছেন ২ হাজার ৩৪১ ভোট। বিপরীতে ডা. ধীমান বড়ুয়া পেয়েছেন ৭৮৭ ভোট। প্রচার ও জন–সংযোগ পদে বিজয়ী পরিষদের ডা. প্রনয় কুমার দত্ত পেয়েছেন ২ হাজার ২২০ ভোট। বিপরীতে ডা. অজয় দাশ পেয়েছেন ৮৫৬ ভোট। সমাজ সেবা সম্পাদক পদে বিজয়ী পরিষদের ডা. আবুল কাশেম পেয়েছেন ২৩২৫ ভোট। বিপরীতে ডা. বিপ্লব কুমার বড়ুয়া পেয়েছেন ৭৩৯ ভোট। সাংস্কৃতিক ও আপ্যায়ন সম্পাদক পদে বিজয়ী পরিষদের ডা. সত্যজিত রায় পেয়েছেন ২২৯১ ভোট। বিপরীতে ডা. মো. মুশফিকুর রহমান পেয়েছেন ৮৩৩ ভোট। গ্রন্থাগার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে বিজয়ী পরিষদের ডা. নুর উদ্দিন জাহেদ পেয়েছেন ২ হাজার ২৪৭ ভোট। বিপরীতে ডা. সুরজিত ঘোষ পেয়েছেন ৮৫৩ ভোট। সদস্য পদে বিজয়ী পরিষদের অধ্যাপক ডা. প্রদীপ কুমার দত্ত সর্বোচ্চ ২৬৫৮ ভোট, ডা. মো. মাহবুব আলম ২২৭৪ ভোট, ডা. প্রীতি বড়ুয়া ২৩২৫ ভোট, ডা. রিজোয়ান রেহান ২২৮৫ ভোট, ডা. মো. শাহ আলম সবুজ ২১৬৪ ভোট, অধ্যাপক ডা. আকবর হোসাইন ভূইয়া ২৩৫৮ ভোট, ডা. এ এ এম শাহেদ পারভেজ খান ২০৮৬ ভোট, ডা. হোসেন আহমদ, ২২৭৮ ভোট, ডা. অসীম কুমার চৌধুরী ১৯৭৪ ভোট এবং ডা. কামাল উদ্দিন মজুমদার ২০৫৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। বিপরীতে একই পদে প্রতিদ্বন্দ্বী ডা. নাসির–মিনহাজ পরিষদের পক্ষে ডা. মো. আবু তৈয়ব ১০৪২ ভোট, ডা. আবু মনসুর মো. দিদারুল আলম ৭৯৬ ভোট, ডা. সেলিম আহমেদ ৮০৯, ডা. সৌমিত্র বড়ুয়া ৮৮০, ডা. পারিজাত পালিত ৫৮০, ডা. নাহিদা খানম শিমু ৭৪৭, ডা. সৌমেন বড়ুয়া ৮১৪, ডা. সাজিয়া আফরিন ৮৪১ ও ডা. মো. ইকবাল উদ্দিন আহমেদ ৬১০ ভোট পেয়েছেন। মোট ২৩টি পদে পূর্ণাঙ্গ প্যানেলে এই জয় তুলে নিলেন ডা. মুজিব–ফয়সল পরিষদ। তবে বিএমএ কেন্দ্রীয় কমিটির চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহ–সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ডা. শেখ সফিউল আজম। তিনি ডা. নাসির–মিনহাজ পরিষদের পক্ষের।