কিশোর কুমার সিংয়ের বিরুদ্ধে কাস্টমস আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কূটনৈতিক সুবিধা অপব্যবহারের অভিযোগে ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশনের (আইএলও) সিনিয়র স্কিল ডেভেলপমেন্ট স্পেশালিস্ট। শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান একথা জানান।
তিনি জানান, গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা, মানি লন্ডারিংসহ বেশ কয়েকটি আইনে সাবেক এই ইউএনডিপির কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। কাস্টমস আইন অনুসারে এ ধরনের অপরাধে অনেকগুলো শাস্তির কথা বলা আছে। আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এর আগে, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় কূটনীতিক সুবিধা অপব্যবহার করে গাড়ি ব্যবহারের অভিযোগে আইএলও কর্মকর্তা কিশোর কুমারের ব্যবহৃত একটি ‘মারুতি সুজুকি’ গাড়ি জব্দ করা হয়। অবৈধ গাড়ির সন্ধান পেয়ে গত ১৯ ডিসেম্বর শুল্ক গোয়েন্দা অফিসে গাড়িটি সমর্পন করতে বলা হয়। শুল্ক গোয়েন্দাদের এই নির্দেশের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) কিশোর সিংয়ের পক্ষে আইএলও’র জেনারেল স্টাফ মো. মনির হোসেন খন্দকার গাড়িটি গোয়েন্দা অফিসে হস্তান্তর করেন।
শুল্ক কর্মকর্তারা জানান, গাড়িটি প্রিভিলেজড সুবিধায় শুল্কমুক্তভাবে আমদানিকৃত। হলুদ রেজিস্ট্রেশন প্লেটে গাড়ি নম্বর ‘এজস ০৪৬’। হলুদ নাম্বার প্লেট সম্বলিত গাড়ি শুধুমাত্র অনুমোদিত কাস্টমস পাসবুকের বিপরীতে প্রিভিলেজড পারসন ব্যবহার করতে পারেন। গাডিটি ইউএনডিপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কিশোর কুমার সিং শুল্কমুক্ত সুবিধায় তার পুরনো পাসবুকে এন্ট্রি করেছিলেন। তিনি ১০ অক্টোবর ২০১১ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ পর্যন্ত ইউএনডিপিতে কর্মরত ছিলেন। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ হতে আইএলও’তে যোগদান করেন। ইউএনডিপিতে থাকা অবস্থায় তিনি শুল্কমুক্ত সুবিধা গ্রহণ করে গাড়িটি পাসবুকে অন্তর্ভূক্ত করেন (পাসবুক নং ১০৫/১১)।
শর্ত অনুযায়ী তিনি ইউএনডিপি ত্যাগ করার সময় পাসবুক ও গাড়ি কাস্টমসের কাছে সমর্পন করার কথা থাকলেও তা না করে নিজের কাছে রেখে দেন। একই সঙ্গে আইএলও থেকে নতুন পাসবুক গ্রহণ করেন। কিন্তু নতুন পাসবুকে গাড়িটি আর এন্ট্রি করাননি। কিন্তু সম্প্রতি শুল্ক গোয়েন্দারা অবৈধ গাড়ি আটক অভিযান শুরু হলে গত ২৬ অক্টোবর কিশোর সিং এনবিআর’র কাছে গাড়িটি নতুন পাসবুকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আবেদন করেন। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে গোয়েন্দাদের গোপন অনুসন্ধান শেষে ১৯ ডিসেম্বর কিশোর কুমার সিংকে শুল্কমুক্ত সুবিধার আনা গাড়িটি ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হস্তান্তরের নোটিশ দেয়া হয়।
আইএলও’র এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা সম্পর্কে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন, ‘তিনি শুল্কমুক্ত সুবিধার অপব্যবহার করে শুল্ক আইন ভঙ্গ করেছেন। এখন আইএলও’র আবাসিক প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করে তার বিরুদ্ধে কাস্টমস আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’