প্রথমবারের মতো পেল বাংলাদেশ নৌবাহিনী চীনের তৈরি দুটি মিং ক্লাস সাবমেরিন । এরমধ্যে একটির নাম রাখা হয়েছে জয়যাত্রা, অপরটি হচ্ছে নবযাত্রা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪.৩০ মিনিটে চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌছেছে সাবমেরিন দুটি। ডিজিএফআইয়ের কর্মকর্তা মো. আবদুল আজিজ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানায়, বিকেল ৫টায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সাবমেরিন দুটি রিসিভ করেছেন। সেখান থেকে বাংলাদেশ নৌবাহিনী চট্টগ্রামকে হস্তান্তর করা হবে। তবে কবে নাগাদ হস্তান্তর করা হবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছুই বলতে পারেননি ডিজএফআইয়ের এই কর্মকর্তা।
এদিকে সাবমেরিন দুটি রিসিভ করার কথা স্বীকার করেছেন চট্টগ্রাম বন্দরের গণসংযোগ কর্মকর্তা জার্ফ আলম চৌধুরী। তিনি বলেন সাবমেরিন জয়যাত্রা ও নবযাত্রা চট্টগ্রাম বন্দরে অবস্থান করছে। নৌবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে অবগত রয়েছেন।
আর এই সাবমেরিন দুটি পাওয়ার পর বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রকৃতপক্ষে প্রথমবারের মতো সাবমেরিন যুগে প্রবেশ করেছে বলে মত প্রকাশ করেছেন নৌবাহিনীর চট্টগ্রামে কর্মরত শীর্ষ এক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে দুটি সাবমেরিন সংযোজনের ঘোষনা দেন। ঘোষনা অনুযায়ী ২০১৬ সালের ৯ দিন বাকী থাকতে সাবমেরিন এসে পৌছেছে বলে জানান তিনি।
নৌবাহিনী সূত্র জানায়, এগুলো আনার জন্য চীনের সাথে ২০১৪ সালে চুক্তি করে সরকার। আর সাবমেরিন দুটি বাংলাদেশে নিয়ে আসার জন্য দুদেশের নৌবাহিনীর অফিসার ও নাবিকদের যৌথ তত্ত¡াবধানে প্রশিক্ষণ ও সি ট্রায়ালও সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়।
০৩৫ জি ক্লাসের সাবমেরিন দুটি চীনের দালিয়ান প্রদেশের লিয়াওনান শীপইয়ার্ডে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে চীন সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, ওএসপি, এনডিসি, পিএসসি-এর কাছে সাবমেরিন দুটি হস্তান্তর করেন রিয়ার এডমিরাল লিউ জিঝু। এ সময় চীনা এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনীর উচ্চ পদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সাবমেরিন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ বলেন, চীন থেকে দুটি সাবমেরিন সংগ্রহের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ত্রিমাত্রিক শক্তি হিসাবে যাত্রা শুরু করলো। তিনি এই সাবমেরিন দুটির নতুনভাবে সজ্জিতকরণ এবং ক্রুদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য চীনা নৌবাহিনীর ভ‚মিকার প্রশংসা করেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য প্রস্তুতকরা এই কনভেনশনাল সাবমেরিন দুটি ডিজেল ইলেকট্রিক সাবমেরিন। যার প্রতিটি দৈর্ঘ্যে ৭৬ মিটার এবং প্রস্থে ৭ দশমিক ৬ মিটার। সাবমেরিন দুটি টর্পেডো ও মাইন দ্বারা সু-সজ্জিত যা শত্রুপক্ষের যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিনে আক্রমণ করতে সক্ষম।