সমিরার বয়স ৯ বছর। আর শিল্পীর ১৪। সমিরা হাসিনা বেগমের ভাগনি। আর শিল্পী আপন মেয়ে। পুরো পরিবার নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে বায়েজিদ এলাকায় গাঁজা বিক্রি করে আসছে এই হাসিনা বেগম। পুরো নাম হাসিনা বেগম। তবে তাকে কেউ এই ভালো নামে চেনে না। উঠতি সন্ত্রাসীরা চেনে গাঁজার ব্যবসায়ী হিসেবে। আর পুলিশের খাতায় গত ৮ বছর ধরে সে কখনো মাদক কিংবা গাঁজা সম্রাজ্ঞী নামে।
তবে শেষ রক্ষা হয়নি। গতকাল গাঁজা বিক্রির সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছে এই মাদক সম্রাজ্ঞী। তবে যেনতেন গাঁজা ব্যবসায়ী নয় হাসিনা। অনেক বড় বড় চালান নিয়ে এসে চট্টগ্রাম শহরে বিক্রি করে সে। ধরা পড়ায় জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট দলকে জানিয়েছে গাঁজা বিক্রির তার নানা ফিরিস্তি। বলেছে, চট্টগ্রাম শহরের উঠতি অনেক ছেলে-মেয়ে এই গাঁজায় আসক্ত। বিপথে চলে যাচ্ছে তরুণ-তরুণীরা। বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির ছেলে-মেয়ে থেকে শুরু করে স্কুল -কলেজের ছেলেরা পর্যন্ত গাঁজা সেবন করতে প্রতিদিন ধর্না দেয় তার কাছে। কেবল তারাই নন, এই তালিকায় নাকি আরো আছে স্বয়ং উকিল থেকে ব্যাংক পাড়ার কর্মকর্তরাও। যারা সরাসরি গাঁজা কিনতে লজ্জা পান তারা নাকি এলাকার উঠতি সন্ত্রাসীদের হাত ধরে গাঁজা কিরতে আসেন গাড়ি চড়ে।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার স্টার শিপ পাহাড়িকা আবাসিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে ‘গাঁজা সম্রাজ্ঞী’ হিসেবে পরিচিত হাসিনা বেগমকে আটক করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে তাকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও দশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে গতকাল জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমানের নেতৃত্বে মাদকবিরোধী এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। একই অভিযানে আরো দুইজনকে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। অভিযানের বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, স্টারশিপ পাহাড়িকা আবাসিক এলাকায় সরকারি খাস জায়গার ওপর অস্থায়ী বস্তি গড়ে উঠেছে। সেখান থেকে বায়েজিদ এলাকায় গাঁজার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকারী গাঁজা সম্রাজ্ঞী হাসিনা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আরো বলেন, অভিযান পরিচালনার সময় দেখা যায় হাসিনা বেগমের ভাগনি সমিরা ও মেয়ে শিল্পী গাঁজার পুরিয়া তৈরি করছে। সেখান থেকে আনুমানিক দুই কেজি গাঁজা ও প্রায় তিন হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া হাসিনা বেগমকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও দশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। ধরা পড়ার পর গাঁজা সম্রাজ্ঞী হাসিনা বেগম বলেন, গাঁজা বিক্রি করে সংসার চলছে। গত ৮ বছর ধরে পরিবারের ৫ সদস্যের পেট চলছে। অনেক চেষ্টা করছি। কিন্তু কেউ কাজ দেয় না। শেষমেশ অপরাধ জগতে পা বাড়িয়েছি। সে আরো বলে, আমারে জরিমানা কইরা লাভ কী। এই নেশা সবাই করে। চিটাগং শহরের অনেক ভালো মানুষ আড়ালে গাঁজায় আসে ভার্সিটির পোলা মাইয়ারা গাঁজা খায়। পুলিশ খায়। উকিল খায়।
প্রতিদিনের আয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, কখনো দিন ৫০০। কখনো ১০০০। যা আয় হয় সেখান থেকে আবার যারা পার্টি আনে তাদেরকে ভাগ দিতে হয়। গাঁজা বিক্রি করতে গিয়া আমাগোরেও চাঁদা দিতে হয়। এই পথ ছাড়লে কেউ কাজ দিবো নারে ভাই। বহুদিনের পুরনো ব্যবসা।
M | T | W | T | F | S | S |
---|---|---|---|---|---|---|
1 | ||||||
2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 |
9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 | 15 |
16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 | 22 |
23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 | 29 |
30 | 31 |