বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী বিজয়ী করতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান। প্রতিটি ভোটার ভাই-বোন ও মুরব্বিীদের প্রতি সালাম ও শুভেচ্ছা জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, বিএনপি ও ধানের শীষের পক্ষে নারায়ণগঞ্জে ইতিমধ্যে যে জনজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে তা জেনে আমি আনন্দিত। আমার আবেদন ভোটের বাক্সে এই সমর্থনের প্রতিফলন ঘটান। নতুন ভোটার, মা-বোন, মুরুব্বীয়ান এবং হিন্দু ও অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নাগরিকসহ সকলের প্রতি আমার আবেদন সময় মতো ভোট কেন্দ্রে গিয়ে নির্ভয়ে ভোট দেবেন। অন্যদেরকেও উৎসাহিত করবেন। মনে রাখবেন, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, আপনাদের ভোট দেওয়ার ও অন্যান্য অধিকার ফিরিয়ে আনা এবং শান্তি স্থাপনে এই নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, সারা দেশের মতো নারায়ণগঞ্জের অধিবাসী এবং বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা জুলুম, নির্যাতন, গুম, খুন, হামলা, মামলা, হয়রানী, দখল, দলীয়করণ, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, সন্ত্রাসসহ নানা ধরণের অন্যায়ের শিকার। আপনাদের এক-একটি ভোট হবে এসবের বিরুদ্ধে এক-একটি বলিষ্ঠ প্রতিবাদ। আমি আশা করি আপনারা নারায়ণগঞ্জে ২২ ডিসেম্বর নীরব ভোট বিপ্লব ঘটাবেন। খালেদা জিয়া বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর হত্যাকা-, গুম, খুন ও সন্ত্রাসের কারণে নারায়ণগঞ্জের সাধারণ মানুষদের আতংকের মধ্যে বসবাস করতে হয়। নির্বাচন চলাকালে আপনারা যাতে পছন্দের প্রার্থীকে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন, কোনো রকম হুমকির মুখে পড়তে না হয়, তার জন্য আমরা সেনা মোতায়েনের দাবি করেছিলাম। আমাদের দাবি মানা হয়নি। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত সরকার সমর্থিতদের মাধ্যমে বিরোধীদলের প্রার্থীদের কিছু ভয়ভীতি প্রদর্শন ও নির্বাচনী প্রচারে বাঁধা দেয়ার ঘটনা ঘটলেও বড় রকমের কোনো সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটেনি। আমি নির্বাচন কমিশন, স্থানীয় প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসমূহ, ক্ষমতাসীন দল এবং সর্বোপরি ক্ষমতাসীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছিÑ ভোটের দিন এবং এর আগে-পরে পুরো নারায়ণগঞ্জে যেন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘœ পরিবেশ বজায় থাকে। আমি নারায়ণগঞ্জের জনগণ এবং বিএনপি ও ২০ দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকার এবং যে-কোনো উস্কানির মুখে সংযম ও শান্তি অক্ষুন্ন রাখার আহ্বান জানাই। খালেদা জিয়া বলেন, মামলা-মোকদ্দমার হাজিরা, শারিরীক অসুস্থতা ও অন্যান্য ব্যস্ততা ও সমস্যার কারণে ইচ্ছা থাকা সত্বেও আমার পক্ষে সশরীরে এই নির্বাচন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জবাসীর মাঝে উপস্থিত হওয়া সম্ভব হয়নি। তবে আমাদের দল-জোটের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা আপনাদেরকে আমার সালাম ও অনুরোধ পৌঁছে দিয়েছেন। এই নির্বাচনে আমরা নারায়ণগঞ্জের বিশিষ্ট আইনজীবী, সজ্জন ও সাহসী ব্যক্তি এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে মেয়র পদে মনোনয়ন দিয়েছি। পরীক্ষিত ও যোগ্য ব্যক্তিদের কাউন্সিলার পদে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। কাউন্সিলর প্রার্থীদের পৃথক পৃথক মার্কা রয়েছে। তবে মেয়র পদে আমাদের প্রার্থী এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের মার্কা ‘ধানের শীষ’। এই ‘ধানের শীষ’ মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ‘ধানের শীষ’। এই প্রতীক বিএনপির প্রতীক, আমার প্রতীক। এই ‘ধানের শীষ’ সন্ত্রাস ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের। এই ‘ধানের শীষ’ শান্তি, উন্নয়ন ও অগ্রগতির প্রতীক। এই ‘ধানের শীষ’ স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে সংহত করা, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং জনগণের অধিকার রক্ষার প্রতীক। আমি আশা করি, নারায়ণগঞ্জবাসী আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ‘ধানের শীষে’ ভোট দিয়ে এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে মেয়র নির্বাচিত করবেন। আমি অনুরোধ জানাই, আমাদের মনোনীত কাউন্সিলার প্রার্থীদেরকেও একইভাবে নির্বাচিত করবেন। খালেদা জিয়া বলেন, আমি আশা করি দল-জোটের নেতা-কর্মী ও জনগণ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত করতে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সাহস ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচনী ফলাফল শেষে বিজয় নিয়ে ঘরে ফিরবেন। নারায়ণগঞ্জে যাতে সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ ও শান্তি বজায় থাকে তার জন্য আমি পরম করুণাময় আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের কাছে মুনাজাত করছি। আমি আশা করি ভোটের আগে ও পরেও আপনাদের নিরাপত্তা ও শান্তি অক্ষুন্ন থাকবে।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031