স্থানীয়দের প্রাধান্যসহ বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই কমিটিতে অস্ত্রধারী । ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকও সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর থেকে বিভিন্ন সময় যোগ্য ও ক্লিন ইমেজধারীদের নেতৃত্বে আনার কথা জানান। তা সত্ত্বেও রাবি ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আবারও অস্ত্রধারী ও স্থানীয়দেরকেই আনা হয়েছে।
রবিবার (১১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্যাডে সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে গোলাম কিবরিয়াকে সভাপতি ও ফয়সাল আহমেদ রুনুকে সাধারণ সম্পাদক করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। তাদের দুজনকেই স্থানীয় ও বিভিন্ন সময় ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে প্রতিপক্ষের ওপর চড়াও হতে দেখা গেছে।
২ অক্টোবর ছাত্রশিবিরের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় অস্ত্র হাতে কিবরিয়া ও রুনু২ অক্টোবর ছাত্রশিবিরের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় অস্ত্র হাতে কিবরিয়া ও রুনুজানা গেছে, সভাপতি কিবরিয়ার বাড়ি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বুধপাড়া এলাকায়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী। আর সম্পাদক রুনুর বাড়ি রাজশাহী পবার নওহাটায়। তিনি কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ থেকে ড্রপ আউট হওয়ার পর গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সান্ধ্য মাস্টার্স কোর্সে ভর্তি আছেন। সদ্য বিদায়ী কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন কিবরিয়া ও সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন ফয়সাল আহমেদ রুনু।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১২ সালের ২ অক্টোবর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শিবির ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়। ওই সময় কিবরিয়া ও রুনুকে দেশীয় অস্ত্রসহ ক্যাম্পাসে দেখা যায়। এ ছাড়া ২০১৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বর্ধিত ফি প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ-পুলিশ যৌথভাবে হামলা চালায়। এ সময়ও রুনুকে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দেখা গেছে। অন্যদিকে ২০১৪ সালের ১৬ জুন ক্যাম্পাসে শিবির নেতা রাসেলের পা কর্তন মামলার তিন নম্বর আসামি কিবরিয়া। একই মামলার দুই নম্বর আসামি রুনু। তবে ওই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন কিবরিয়া।
২ ফেব্রুয়ারি বর্ধিত ফি বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে গুলি ছোড়েন রুনু২ ফেব্রুয়ারি বর্ধিত ফি বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে গুলি ছোড়েন রুনু
এদিকে, সভাপতি-সম্পাদক ছাড়াও তিনজন সহ-সভাপতি, চারজন যুগ্ম-সম্পাদক ও চারজন সাংগঠনিক সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়েছে রাবি ছাত্রলীগের। এই ১১ জনের মধ্যে চারজনই রাজশাহীর। সহ-সভাপতিরা হলেন কাজী আমিনুল হক লিংকন, সৈকত হোসাইন সৈকত ও হাবিবুল্লাহ নিক্সন। যুগ্ম-সম্পাদকরা হলেন মিজানুর ইসলাম, ফয়েজ আহমেদ, মামুন শেখ ও শাহিনুল সরকার ডন। সাংগঠনিক সম্পাদকরা হলেন আব্দুল মমিন, সাবরুল জামিল সুস্ময়, এনায়েত হক রাজু ও রেজাউল করিম রাজু। এদের মধ্যে লিংকন ও ডনের বাড়ি বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন বুধপাড়ায়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ভদ্রা এলাকায় বাড়ি এনায়েত হক রাজুর। রেজাউল করিম রাজুর বাড়ি রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন বলেন, ‘ত্যাগী নেতা, রাজশাহীর মতো জায়গায় যারা ৫ জানুয়ারির আগে ও পরে জীবনবাজি রেখে রাজনীতি করেছে এবং তুলনামূলক ইমেজ ভালো তাদেরকে দিয়েই কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, গত ৮ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাস বাংলাদেশ মাঠে রাবি ছাত্রলীগের ২৫তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031