২০১৮ সালের জুন মাসের মধ্যে দেশের নিরক্ষর সব মানুষকে অক্ষরজ্ঞান দেওয়া হবে। দিনাজপুরের নিরক্ষরমুক্ত ফুলবাড়িয়া ও পার্বতীপুর উপজেলাকে পাইলট প্রকল্পকে ধরে দেশের নিরক্ষর সব মানুষকে এর আওতায় আনা হবে। সরকারের কোনও অর্থ ব্যয় না করেই বেসরকারি পর্যায়ে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নীতিগতভাবে সমর্থন দিয়েছেন।
সোমবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দফতরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান এসব তথ্য জানান।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি অর্থ খরচ না করে ২০১৫ সালে দিনাজপুরের ফুলবাড়িয়া এবং পার্বতীপুর উপজেলাকে নিরক্ষরমুক্ত করা হয়। স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের সব অংশ সংগঠন এবং শিক্ষকসহ শিক্ষিত সচেতন মানুষদের উদ্বুদ্ধ করে এ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এটিকে পাইলট প্রকল্প ধরে দেশের সব উপজেলা এর আওতায় এনে ২০১৮ সালের জুন মাসের মধ্যে দেশকে নিরক্ষরমুক্ত করা হবে।
মন্ত্রী জানান, এর পাশাপাশি সারাদেশের ২৫০ উপজেলার ৪৫ লাখ মানুষকে অক্ষরজ্ঞান দিতে ২০১৪ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৪৫২ কোটি টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই কাজটি করবে বেসরকারি সংস্থা। সরকারের এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা করবে নতুন এই উদ্যোগ।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘রাজনীতির পাশাপাশি স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন এবং শিক্ষিত মানুষকে সম্পৃক্ত করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সারাদেশে কত মানুষ নিরক্ষর তা জরিপ করা হবে ও তাদের সহায়তায় নিরক্ষর মানুষদের দেড় বছরের মধ্যে অক্ষর জ্ঞান দেওয়া হবে।’
প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী জানান, ফুলবাড়িয়া ও পার্বতীপুর উপজেলার ১৯টি ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার নিরক্ষর মানুষকে এক বছরের মধ্যে অক্ষরজ্ঞান দেওয়া হয়েছে। এ দুটি উপজেলাকে নিরক্ষরমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘দেশের ৪৫ লাখ লোককে নিরক্ষরমুক্ত করতে এনজিওকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। একনেকে পাস করা এ প্রকল্প বাস্তবায়নে এনজিও বাছাইয়ের প্রক্রিয়া চলছে। এই প্রকল্প সঠিক বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নির্ধারিত ২৫০ উপজেলার নিরক্ষর মানুষের জরিপ থাকা প্রয়োজন। তা না হলে এনজিগুলো অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন লোকদের নিরক্ষর করার ঘোষণা দেবে প্রকল্পের আওতায়। তাতে দেশের প্রকৃত নিরক্ষর মানুষগুলো নিরক্ষরই থেকে যাবে। ভবিষ্যত এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের বিনা পয়সার সামাজিক কর্মসূচির জরিপ কাজে লাগবে। আমরা এনজিওদের তখন বলতে পারবো ২৫০ উপজেলায় এই মানুষগুলো নিরক্ষর, তাদের তোমরা অক্ষর জ্ঞান দিতে পারো। তাহলে সরকারের প্রকল্পেও ফাঁকি দিতে পারবে না তারা।
মন্ত্রী জানান, দেশের আট বিভাগে দফায় দফায় দলীয় নেতাকর্মীদের ডেকে এ বিষয়ে বৈঠক করে নির্দেশনা দেওয়া হবে। দিনাজপুরের কাজটিকে সামাজিক কাজের পাইলট প্রকল্প ধরে তাদের এ কাজে সম্পৃক্ত করা এবং প্রয়োজনীয় বিষয় জানানো হবে। আট বিভাগে নিজে গিয়ে মন্ত্রী এ কর্মসূচি ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে শুরু করা হবে। দিনাজপুরে শিক্ষিক সব দলমতের মানুষেরও সাড়া পাওয়া গেছে। সারাদেশেই এই সাড়া পাওয়া যাবে। শিক্ষিত সব মানুষকে শিক্ষক ধরেই চলবে নিরক্ষরমুক্ত করার বিশেষ উদ্যোগ বাস্তবায়ন।