নাটোরের প্রতিটি উপজেলায় শীতকালে প্রচুর পরিমাণ ফুলকপি, বাঁধাকপি, শীম, বরবটি, টমেটো, বেগুন, করলাসহ নানা ধরনের সবজির চাষ হয়ে থাকে। বাহারি আর মনোমুগ্ধকর সবজিতে ক্ষতিকর পোকামাকড় দমনে কৃষকেরা প্রতিনিয়ত মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক কীটনাশক প্রয়োগ করছেন। নিয়ম অনুযায়ী এসব কীটনাশক (বিষ) প্রয়োগের পাঁচ থেকে সাতদিন পর উৎপাদিত সবজি উত্তোলন ও বাজারজাত করার কথা। কিন্তু অজ্ঞতার কারণে কৃষকেরা সকালে বিষ প্রয়োগ করে বিকেলে বা পরদিনই তা বাজারজাত করছেন।
পোকামাকড় দমনে কীটনাশক প্রয়োগের পর নির্ধারিত সময়ের আগেই বাজারে চলে আসছে নাটোরের শীতকালীন সবজি। কৃষি বিভাগের তদারকির অভাবে বিষযুক্ত এসব সবজি প্রতিনিয়ত বিক্রি হচ্ছে স্থানীয় হাটবাজারে। এর ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ডিলারদের পরামর্শ অনুযায়ী জমিতে পোকামাকড় দমনের জন্য ক্ষতিকর উচ্চামাত্রার এসব বিষ প্রয়োগ করেন কৃষকেরা। স্থানীয় কৃষকেদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কৃষিবিভাগ বা অন্য কোন সংস্থা থেকে তাদের কোন পরামর্শ না দেওয়ায় এসব সবজি খেয়ে কোন ক্ষতি হয় কিনা তা তারা জানেন না।
নাটোরের লালমনিপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল জলিল জানান, পোকামাকড় দমনে তারা কীটনাশক ব্যবহার করেন। তবে কীটনাশক কী পরিমাণ ব্যবহার করতে হয় তা তারা জানেন না। ডিলারদের পরামর্শ অনুযায়ী জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করেন বলে জানান তিনি।
উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, কীটনাশক ব্যবহারের কতোদিন পর সবজি বাজারজাত করতে হয় এ বিষয়ে কৃষি বিভাগেরও কোনো পরামর্শ বা সহযোগিতা পাই না। স্বাস্থ্যের ঝুঁকি আছে কীনা তা জানা নাই।
নাটোরের মাদ্রাসা মোড়ের সবজি বিক্রেতা হান্নান আলী জানান, সঠিক তদারকির অভাব আর সেই সঙ্গে অজ্ঞতার কারণে বাজারে বিষযুক্ত সবজি কেনাবেচা হয়। সবজি ক্রয় আসা আইনুন নাহার জানান, কোন সবজি বিষযুক্ত তা তো দেখে বোঝার উপায় নেয়। তাই বাধ্য হয়ে বিষই কিনে খেতে হয়।
এসব সবজির ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে নাটোরের সিভিল সার্জন আজিজুল ইসলাম জানান, কীটনাশকযুক্ত সবজি খাওয়ার ফলে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ার সম্ভাবনা অধিক। তাই নিয়ম মেনেই সবজি উৎপাদন ও বাজারজাত করা উচিত।
এ ব্যাপারে কৃষিবিভাগের উপ-পরিচালক আলহাজ উদ্দিন আহাম্মেদ জানান, কীটনাশক প্রয়োগের নির্ধারিত সময় পরে সবজিগুলো উত্তোলন ও বাজারজাত করণের নিয়ম সম্পর্কে প্রতিনিয়ত কৃষকদের উদ্বৃদ্ধ করা হয়ে থাকে।