হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন। দেশের পার্বত্য অঞ্চলে স্বল্প পরিসরে বেসরকারিভাবে কাজু বাদামের চাষ হচ্ছে। কোনো ধরনের প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা ছাড়াই চলছে এ চাষবাদ। এ খাতের উন্নয়নে চাষিরা সরকারের কাছ থেকে কোনো উrসাহ, প্রণোদনা, সাহায্য ও সহযোগিতা পাননি।সম্ভাবনাময়ী খাতটি দীর্ঘ দিন ধরে অবহেলিত রয়েছে।
কাজু বাদাম একটি পুষ্টিকর এবং মজাদার খাদ্য। এটি উrকৃষ্ট শিশুখাদ্যও বটে, যার চাহিদা সারা দুনিয়াতে। কিন্তু বাংলাদেশে কাজু বাদামকে উচ্চবিত্তদের খাবার বলে গণ্য করা হয়। কাজু বাদাম থেকে অল্প খরচে হাজার হাজার টন পুষ্টিকর জুস উrপাদন হবে। এ জুসে অনেক পুষ্টি উপাদান ছাড়াও কমলার চেয়ে প্রায় ছয় গুণ বেশি ভিটামিন সি আছে। এ জুস দেশের মানুষের ভিটামিন সি’র অভাব পূরণে সহায়ক হবে। আর কাজু বাদামের গাছগুলো হাজার হাজার টন গ্রিন হাউজ গ্যাস (কার্বন ডাইঅক্সাইড) শোষণ করে।
স্বল্প পরিসরে দেশে কাজু বাদাম চাষ হলেও অপার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। সরকারি সহযোগিতা পেলে বেসরকারিভাবে উrপাদন করে বিশ্বের কাজু বাদাম রফতানির শীর্ষ তালিকায় নাম লেখাতে পারে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে এ পেশায় প্রায় ৩ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। উrপাদিত কাজু বাদামের ৭৫ শতাংশ রফতানির মাধ্যমে বাংলাদেশ বছরে প্রায় ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা (৬০০ মিলিয়ন ডলার) রফতানি আয় করবে বলে মনে করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
এসব বিবেচনায় নিয়ে সম্প্রতি ২০১৫-১৮ সাল পর্যন্ত প্রণয়ন করা রফতানি নীতিমালায় কাজু বাদামকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাত হিসেবে ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে চাষিদের উপাদন ও রফতানিতে উrসাহ প্রদান, সহজ শর্তে ও কম সুদে ঋণ, প্রশিক্ষণ ও তথ্য দিয়ে সহায়তা করার কথাও নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়।
রুমা এবং থানচি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘পার্বত্য অঞ্চলেই উন্নতমানের কাজু বাদাম চাষ করা সম্ভব। এখানকার মাটি ও আবহওয়া বাদাম ফলনের জন্য উপযুক্ত। যে কোনো অনুর্বর পতিত জমিতেও ভালোমানের কাজু বাদাম চাষ করা সম্ভব। দেশে ও বিশ্ব বাজারে এ পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই সরকারের পক্ষ থেকে এ খাতের উন্নয়নে সর্বাত্মক সহায়তা করাi সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ অর্গানিক প্রোডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুস সালাম দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘কাজু বাদাম চাষে বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারি সহযোগিতা পেলে বেসরকারিভাবে কাজু বাদাম উৎপাদন করে দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে ৬০০ মিলিয়ন ডলার রফতানি আয় করা সম্ভব হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশে পার্বত্য অঞ্চলসহ বিভিন্ন জেলায় এক লাখ হেক্টরের বেশি পতিত জমি রয়েছে। সরকারি সহযোগিতা পেলে ওই জমিতেই বছরে নূন্যতম এক লাখ মেট্রিকটন উন্নতমানের কাজু বাদাম ফলন করা সম্ভব। সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা পেলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে দেশেই সহজলভ্য হয়ে উঠবে এটি।’
উপস্থিত ছিলেন :-
সভাপতিত্ব করেন জনাব দিলীপ কুমার বণিক, জেলা প্রশাসক, বান্দরবন
জনাব মোঃ ওবায়দুল আজম, যুগ্ন-সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
জনাব ফকির ফিরোজ আহমেদ, কো-অর্ডিনেটর, বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল
জানব ক্যহ্লা চিং মারমা, চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ, থানটি
জনাব আলতাফ হোসেন, উপ-পরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বান্দরবন