গাড়ি থেকে নামলেই দেখা যায় বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন। এলাকাটি সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের ভেতরে। এখানে গাড়ি থেকে নেমে সহজে বনে যেতে পারেন সুন্দরবনপ্রেমীরা।
এ কারণেই সাতক্ষীরা থেকে সর্বাধিকসংখ্যক পর্যটক সুন্দরবনে প্রবেশ করেন। পর্যটন মৌসুমে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আয় হয় এখান থেকে। আর সেই রেঞ্জ অফিস থেকে বনে প্রবেশের অনুমতি বন্ধ করে দেয়ায় সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জকেন্দ্রিক পর্যটন শিল্পে ধস নেমেছে। বলা যায় একপ্রকার স্থবির হয়ে পড়েছে এ রেঞ্জের পর্যটন শিল্প।
শ্যামনগর উপজেলা সদরের সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটন ব্যবসায়ী মো. ছাকি ও একই উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের ট্যুরিস্ট ব্যবসায়ী মো. মিজানুর রহমান। এ বিষয়ে কথা হয়েছে তাদের সঙ্গে।
তারা জানান, পর্যটন উপযোগী নিজস্ব কয়েকটি লঞ্চ ও বড় আকারের ট্রলার রয়েছে। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে তারা শুধু সুন্দরবনকেন্দ্রিক সাতক্ষীরা রেঞ্জ অফিস থেকে পারমিশন নিয়ে পর্যটন ব্যবসা নির্বিঘ্নে করছেন। সম্প্রতি খুলনা বিভাগীয় বন রেঞ্জ অফিস থেকে পারমিশন বন্ধ করা হয়েছে।
তারা আরো জানান, সরকার নির্ধারিত একই রাজস্ব পরিশোধ করে এবং স্টেশন অফিস থেকে একই নিরাপত্তাকর্মী নিয়ে সুন্দরবনে অবস্থান করার অনুমতি রেঞ্জ অফিস থেকে বন্ধ করে দেয়ায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াসহ সরকারও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, সুন্দরবন ভ্রমণের জন্য বিভাগীয় বন অফিস খুলনা থেকে পারমিশন নিয়ে আসতে এক বা দুদিনের সময় লাগে। কিন্তু যারা বিশ্ব ঐতিহ্য দেখতে আসেন তারা বড়জোর ২-৩ দিনের জন্য আসেন। যদি পারমিট নিতেই দুদিন কেটে যায়। তাহলে আর বনে প্রবেশের সময় থাকে না পর্যটকদের। যার কারণে সাতক্ষীরা রেঞ্জ দিয়ে সুন্দরবন ভ্রমণ করতে পর্যটকরা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খুলনা বিভাগীয় বন অফিসের কোষাধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীর আলম বর্তমানে অফিসের প্রধান সহকারীর চলতি দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি নিজস্ব পদ্ধতিতে কর্মকর্তাদের ভুল তথ্য দিয়ে অর্থের মাধ্যমে বিভাগীয় বন অফিস থেকে সুন্দরবনে অবস্থানের অনুমতি দিয়ে আসছেন।
এ বিষয়ে সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সাইদ আলী জানান, বিষয়টি তিনিও শুনেছেন। এ বিষয়ে তিনি জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেও আশ্বাস দেন।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. মাকছুদ আলম বলেন, বর্তমানে অফিস থেকে একদিনের পারমিশন দেয়ার লিখিত অনুমতি রয়েছে। রেঞ্জ অফিস থেকে সুন্দরবনে অবস্থানের জন্য বিভাগীয় বন কর্মকর্তার লিখিত অনুমতিপত্র পেলে রেঞ্জ হেড কোয়াটার থেকে পারমিশন দেয়া হবে।