বাংলাদেশ সামরিক শক্তির দিক থেকে আরও একটু শক্তিশালী হলো । সমুদ্রসীমা পাহারা দিতে এখন জলে ভাসা জাহাজের পাশাপাশি বাংলাদেশ নজরদারি চালাতে পারবে ডুবোজাহাজের মাধ্যমেও।
এখন দুটো সাবমেরিনের মালিক হয়েছে বাংলাদেশ। চীন সরকার এই দুটি সাবমেরিন হস্তান্তর করেছে বাংলাদেশকে। সাবমেরিন দুটির নাম রাখা হয়েছে বানৌজা ‘নবযাত্রা’ ও বানৌজা ‘জয়যাত্রা’।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) তথ্য কর্মকর্তা ওয়াজিউদ্দিন আহমেদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, এই প্রথম বাংলাদেশ এ ধরনের আধুনিক যুদ্ধজাহাজের মালিক হলো।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা সাবমেরিনের এই সংযোজনকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা বলছেন, এখন আশপাশের দেশগুলো বাংলাদেশের সামরিক শক্তিকে আরও সমীহ করতে বাধ্য হবে।
সোমবার চীনের দালিয়ান প্রদেশের লিয়াওনান শিপইয়ার্ডে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদের কাছে সাবমেরিন দুটি হস্তান্তর করেন চীনের রিয়ার এডমিরাল লিউ জিঝু। এ সময় চীন এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনীর উচ্চপদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিকালে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) সহকারী পরিচালক সাইদা তাপসী রাবেয়া লোপা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সাবমেরিন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী প্রধান নিজামউদ্দিন বলেন, চীন থেকে দুটি সাবমেরিন সংগ্রহের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ত্রিমাত্রিক শক্তি হিসেবে যাত্রা শুরু করল। সাবমেরিন দুটির নতুনভাবে সাজানো ও নাবিকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য চীনা নৌবাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেন তিনি।
নিজামউদ্দিন আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার নৌবাহিনীকে আধুনিক, ত্রিমাত্রিক ও যুগোপযোগী বাহিনী হিসাবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন বাস্তবমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। নৌবাহিনীর উন্নয়নে এসব যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন নৌপ্রধান।
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য প্রস্তুতকৃত এই কনভেনশনাল সাবমেরিন দুটি ডিজেল ইলেকট্রিক সাবমেরিন। যার প্রতিটির দৈর্ঘ্যে ৭৬ মিটার এবং প্রস্থে ৭.৬ মিটার। সাবমেরিনসমূহ টর্পেডো ও মাইন দ্বারা সু-সজ্জিত যা শত্রুপক্ষের যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিনে আক্রমণ করতে সক্ষম।
সাবমেরিন দুটি বাংলাদেশে আনার জন্য ইতোমধ্যে দুই দেশের নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ও নাবিকদের যৌথ তত্ত্বাবধানে বাস্তব প্রশিক্ষণ ও সী ট্রায়াল সফলভাবে শেষ হয়েছে। ০৩৫-জি ক্লাসের সাবমেরিন দুটি খুব শিগগির বাংলাদেশে এসে পৌঁছাবে এবং আগামী বছরের শুরুতে নৌ বহরে যুক্ত হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও সাবেক মেজর জেনারেল আবদুর রশিদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এটা নতুন কিছু নয়, আগের পরিকল্পনা অনুযায়ীই হয়েছে। গত বছরের শেষদিকে সাবমেরিন দুটি দেয়ার কথা ছিল। আজ শুধু সরবরাহ করল।’ তিনি বলেন, ‘সাবমেরিন দুটি পেয়ে বাংলাদেশের সামরিক ব্যবস্থায় নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। এটা অব্যশই ভাল কথা।’