বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর সংবিধানে লেখা হয়েছে রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম। একটি দেশ কখনও ধর্মের ভিত্তিতে সৃষ্টি হতে পারে না।’
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে প্রয়োজন বাংলাদেশ ও ভারতের গণমানুষের সুদৃঢ় ঐক্য’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে সার্ক কালচারাল সোসাইটি নামের একটি সংগঠন।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সংবিধান সংশোধনের পরও রাষ্ট্র ধর্মটাকে একটা কৌশল হিসেবে রেখে দেয়া হয়েছে। সুযোগ পেলেই সংবিধান থেকে উঠিয়ে দিয়ে সম্পূর্ণরূপে একটি ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে। বিবিসির এক সাক্ষাৎকারেও আমি বলেছি ‘ইসলাম রাষ্ট্র ধর্ম’ হতে পারে না। বাংলাদেশ হবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র।’
আওয়ামী লীগ সব ক্ষেত্রে ধর্ম নিরপেক্ষতা বজায় রাখে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ‘আমাদের সংগ্রাম ধর্মান্ধদের বিরুদ্ধে, ধর্মের বিরুদ্ধে নয়। আওয়ামী লীগ সৃষ্টি থেকেই ধর্মান্ধদের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। স্বাধীনতার পর এই ধর্মান্ধরা ঘাঁপটি মেরে ছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে তারা আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।’
সন্ত্রাসবাদ বৈশ্বিক সমস্যা উল্লেখ করে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ শুধু আমাদের দেশের সমস্যা নয়, এটা সারা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। এখন সন্ত্রাসবাদ অনেক ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। বিশ্ব নেতার এই বিষয়টিকে খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। এই সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
সন্ত্রাসবাদ দূর করতে বাংলাদেশ-ভারত এক সঙ্গে কাজ করে যেতে হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ দূরীকরণে দুই দেশকেই ভূমিকা নিতে হবে। ভারত থেকে অস্ত্র আসা বন্ধে উদ্যোগ নিতে হবে।’ সন্ত্রাসবাদ বন্ধে সুশীল সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে উল্লেখ করে সাবেক এ খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন খাদ্যে উদ্বৃত্ত দেশ। যে ইকোনোমিস্ট পত্রিকা আমাদের সব সময় বিরোধিতা করে সেই ইকোনোমিস্ট বলছে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে রোল মডেল।’
তিনি বলেন, ‘আমরা একটা যুদ্ধের মধ্যে রয়েছি। বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এ দেশে কোনো খাদ্যে ঘাটতি নেই। এ কারণে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেছেন ‘বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল’। সোসাল ইনডিকেটরের দিক থেকে বাংলাদেশ এখন অনেক এগিয়ে।’
সার্ক কালচারাল সোসাইটির সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন, সার্ক কালচারাল সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক সুজন ঘোষ, শ্রী অজয় দত্ত, দৈনিক ভোরের ডাকের বার্তা সম্পাদক মাহবুব আলম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ প্রমুখ।