স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন আওয়ামী লীগকে বিএনপির আন্দোলনের ভয় দেখানোকে কুপি জ্বালিয়ে সূর্যকে ভয় দেখানোর সঙ্গে তুলনা করেছেন । তিনি বলেন, ‘কুপি জ্বালিয়ে সূর্যের সামনে দাঁড়িয়ে সূর্যকে আলো দেখানো হাস্যকর ছাড়া কিছু নয়। আন্দোলনের মাধ্যমে যে দলের (আওয়ামী লীগ) জন্ম তাদের আন্দোলনের ভয় দেখানোও হাস্যকর ছাড়া কিছু নয়। আমাদের ছাত্রলীগের কয়েকটা ছেলে পাঠালেই তারা পালিয়ে যাবে, তারা আবার আন্দোলনের ভয় দেখায়।’
শনিবার বিকালে ফরিদপুরের মধুখালী ঈদগাহ মাঠে আয়োজিত আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এলজিআরডি মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আন্দোলনের সময় শত অত্যাচারের মাঝেও মাঠ ছাড়িনি। যে দলের চিফ হুইফ (জয়নাল আবেদিন ফারুক) পুলিশের ভয়ে রাস্তায় কাপড়-চোপড় ফেলে দৌড়ে পালায় তাদের মুখে আন্দোলনের কথা মানায় না।’
‘বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় আমাদের নেতাদের উপর অনেক অত্যাচার হয়েছে, তারপরও আমরা রাস্তা দখলে রেখেছিলাম। মোহাম্মদ নাসিম ও মতিয়া চৌধুরীর উপর লাঠিপেটা করা হলেও তারা মাঠ ছাড়েননি। সুতরাং আমাদের হুমকি দিয়ে লাভ হবে না।’-বলেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পদক বাতিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পদক বাতিল হওয়ার পরও বিএনপির পক্ষ থেকে পাঁচ জন লোকের একটি মিছিলও বের করতে পারেনি। এতে তাদের আন্দোলনের সক্ষমতা সম্পর্কে আরও স্পষ্ট হয়।’
মন্ত্রী বলেন, ‘লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে কাজ করছেন তা নির্দিষ্ট সময়েই শেষ হবে। আমরা প্রত্যাশা করি ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হবে। তাই শেখ হাসিনার সেই লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের জন্য সকল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ফরিদপুরবাসী আমরা বিগত দিন একতাবদ্ধভাবে এক মঞ্চে কখনো বসিনি। আজ থেকে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে আগামী নির্বাচনে ফরিদপুরের চারটি আসন উপহার দেবো।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, ‘ এই অঞ্চলে অনেকে আছে যারা রাতের অন্ধকারে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে আঁতাত করে তাদের উদ্দেশ্যে বলছি আপনারা সঠিক পথে ফিরে আসুন। দল করলে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে দল যাকে সমর্থন দেবে তার পক্ষে কাজ করতে হবে। শেখ হাসিনার নির্দেশ অমান্য করে আত্মীয় স্বজনদের পক্ষে কাজ করা যাবে না। ’
অনুভূতি প্রকাশে সংবর্ধিত নেতা আব্দুরর হমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে বিশ্বাস করে যে দায়িত্ব দিয়েছেন সেই বিশ্বাস রক্ষার দায়িত্ব পালনের জন্য আমি আমার জীবন উৎসর্গ করলাম। এই মধুখালীর মানুষ যারা আমাকে বুকে ধারণ করেছে আমি আস্থার সঙ্গে বলতে পারি তাদের সন্তানকে তারা ছুড়ে ফেলবে না। সেই মুধখালীর মানুষকে সাক্ষি রেখে এই প্রত্যয় ব্যক্ত করলাম।’
আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘শেখ হাসিনা এই ফরিদপুর অঞ্চল থেকে অনেককেই ছাত্রলীগের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তাদের অনেকেই শেখ হাসিনার সঙ্গে বেইমানি করেছেন। একমাত্র আব্দুর রহমান যিনি দলের ক্রান্তিকালেও শেখ হাসিনার আদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন।’
মধুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মির্জা মনিরুজ্জামান বাচ্চুর সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজ্জাম্মেল হক, কার্য নির্বাহী সদস্য এসএম কামাল হোসেন, ইকবাল হোসেন অপু, আনোয়ার হোসেন, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা, সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান প্রমূখ।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী মমতাজ ও স্থানীয় শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন।