ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী বলেছেন, আমাদের দেশে জমি কম, মানুষ বেশি। তারপরও আবার অপরিকল্পিতভাবে বাড়ি-ঘর তৈরি করায় কৃষি জমি আরও কমে যাচ্ছে। এই অবস্থা থেকে আমাদেরকে বেড় হয়ে আসতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, অপরিকল্পিত বাড়ি নির্মাণ ঠেকাতে আগামীতে স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে অনুমোদন নিয়ে বাড়ি বানাতে হবে এবং এ ব্যাপারে চেয়ারম্যানদেরকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর খামারবাড়ীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ‘গ্রামীণ-নগরীয় আবাসন : বাস্তবতা ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনার ও মুক্ত আকাশ সম্মাননা-২০১৬ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সেমিনারের আয়োজন করে বিপিআরবি ও মুক্ত আকাশ।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমাদেরকে পরিকল্পনা করে চলতে হবে। যত্রযত্র আবাসান গড়ে তোলার সুযোগ আর নেই। তাই আবাসন গড়তে হলে স্থানীয় চেয়ারম্যানদের অনুমোদন নিতে হবে।

আমরা চেয়ারম্যানদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবো। তাদেরকে পরিকল্পিত আবাসন গড়ে তোলার খুটিনাটি জানাবো। এ ব্যাপারে চৈ-চৈ করলে চলবে না। আবাসন ব্যবস্থাকে নজরদারীর মধ্যে রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী ।
সেমিনারে অন্যান্য বক্তাও পরিকল্পিত আবাসন ব্যবস্থার ওপর জোর দেন। তারা  বলেন, অপরিকল্পিতভাবে আবাসন গড়ে তোলার কারণে বছরে ২% হারে কৃষি জমি হারিয়ে যাচ্ছে। এটি খুবই উদ্বেগের বিষয়। ফলে গ্রামীণ আবাসন ব্যবস্থাকে পরিকল্পনার মধ্যে আনতেই হবে।

আবাসন মানুষের মৌলিক অধিকার উল্লেখ করে- অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, পরিকল্পনার মাধ্যমেই আবাসন সমস্যার সমাধান করতে হবে। আবাসন মানে ঘরের মধ্যে ঘুমানোর জায়গা- বিষয়টি এমন নয়, এর সঙ্গে আরও অনেক কিছু জড়িত। এর সঙ্গে আরও অনেক কিছুরই দরকার হয়।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে দুর্বার গতিতে মন্তব্য করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, দেশ এখন উন্নয়নের ধারায় মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৪৪ মার্কিন ডলারে।

তিনি বলেন, আগে বর্ষায়  ছেলে-মেয়েরা যখন স্কুলে যেত তখন জুতা হারিয়ে যেত কাঁদা মাটিতে, আর এখন তারা ২ মিনিটেই স্কুলে যেতে পারছে।
সরকার পরিকল্পনামাফিক এগিয়ে যাচ্ছে- উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, জনগণের প্রত্যাশার বাইরে কোন কিছু চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে না। সকলের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করার লক্ষে সারা দেশে ১৭ হাজার পুকুর করার পরিকল্পনাও করছে সরকার। এই পুকুর থেকে গ্রামের মানুষের খাবার পানির ব্যবস্থা হবে।

ভুগর্ভস্থ পানি ব্যবহারের ফলে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে জানিয়ে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন বলেন, এখন আমরা যে পানি ব্যবহার করছে তার শতকরা ৮০ ভাগই  ভুর্গভস্থ পানি, উপরিভাগের পানি ব্যবহার হচ্ছে মাত্র ২০ ভাগ। এর ফলে পানির স্তর কোন জায়গায় ১০ মিটার, কোন জায়গায় ৩০ মিটার নিচে চলে গেছে। এর ফলে আমাদের জমির উর্বরতা হরিয়ে যাচ্ছে। এটিও চিন্তার বিষয়। এই সমস্যা থেকে বের হয়ে আসার উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। আগামীতে ৮০ ভাগ উপরিভাগের পানি ব্যবহার করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে এবং এ লক্ষ্যে কাজ চলছে।

এর আগে পেশাগত ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে ৬ জন বিশিষ্ট লোককে সম্মাননা জানানো হয়। গুণীজনের হাতে মুক্ত আকাশ সম্মাননা ২০১৬ তুলে দেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী। সম্মাননা প্রাপ্তরা হলেন-  তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা প্রকৌশলী ইমাম উদ্দীন আহমদ চৌধুরী, বুয়েটের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী ওয়াহীদ উদ্দিন আহমেদ, বুয়েটের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল মতিন পাটোয়ারী, ডিজাইন প্লানিং ম্যানেজমেন্ট (ডিপিএম) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এম এ সোবহান, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সাবেক সভাপতি স্থপতি খাদেম আলী, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড কনসালট্যান্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক স্থপতি লাইলুন নাহার একরাম।

চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী এস এম নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম বজলুল করিম চৌধুরী, আইইবির সভাপতি প্রকৌশলী কবির আহমেদ ভূঁঞা, রিহ্যাবের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী মো. আব্দুল আউয়াল প্রমুখ।

– See more at: http://www.dhakatimes24.com/2016/11/10/7058/%E0%A6%86%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%80%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A7%9C%E0%A6%BF-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%B9%E0%A6%B2%E0%A7%87-%E0%A6%9A%E0%A7%87%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%85%E0%A6%A8%E0%A7%81%E0%A6%AE%E0%A6%A4%E0%A6%BF-%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%97%E0%A6%AC%E0%A7%87#sthash.azmVGLp5.dpuf

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031