প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতে এক নজিরবিহীন ঘোষণায় মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর থেকেই পাঁচশো ও এক হাজার টাকার সব নোটে লেনদেন অবৈধ ঘোষণা করেছেন । সোজা কথায়, মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর থেকেই ভারতে নিষিদ্ধ হয়ে গেল সর্বোচ্চ মূল্যমানের এই দুটো নোট।
দেশে কালো টাকার বিস্তার আর দুর্নীতি ঠেকাতেই এই নাটকীয় পদক্ষেপ, মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে সে কথাও জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি।
ঘোষণায় বলা হয়েছে, দেশে যার যার কাছে ৫০০ আর ১০০০ রুপির নোট আছে, তারা সেগুলো আগামী পঞ্চাশ দিনের মধ্যে যে কোনও ব্যাঙ্কের শাখায় জমা দিতে পারবেন। অর্থাৎ এর জন্য সময় পাওয়া যাবে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
যাদের কাছে কালো টাকার পাহাড় আছে ,তারা এর ফলে হয় সেই টাকা ব্যাঙ্কে জমা দিতে বাধ্য হবেন, কিংবা টাকা যদি তারা না জমা দেন, তাহলে তাদের সেই টাকা চিরতরে খোয়াতে হবে। এই ঘোষণার উদ্দেশ্য সেটাই।
তবে সাময়িকভাবে এর জন্য দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে একটা গোলযোগ ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে, সেটা প্রধানমন্ত্রীও স্বীকার করেছেন এবং দেশে দুর্নীতি ও কালো টাকার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের স্বার্থে সেই অসুবিধা মেনে নেওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন।
৫০০ টাকা ও ১০০০ টাকার নোটে লেনদেন মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে নিষিদ্ধ হলেও হাসপাতালে, রেলস্টেশনে ও বিমানবন্দরে অবশ্য আরও তিনদিন, অর্থাৎ ১১ নভেম্বর পর্যন্ত এই নোটগুলো ব্যবহারের সুযোগ থাকবে।
সোজা কথায়, যাদের প্রিয়জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন, কিংবা যারা জরুরি ভিত্তিতে বিমান বা ট্রেনের টিকিট কাটবেন, তাদের যাতে অসুবিধা না-হয় সে জন্য তাদের সীমিত সময়ের জন্য এই সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
৩০ ডিসেম্বরের সময়সীমা শেষ হওয়ার পর ভারত সরকার নতুন করে ৫০০, ১০০০ বা তার চেয়েও বেশি মূল্যমানের নতুন ধাঁচের নোট বাজারে চালু করবে বলে ইঙ্গিত মিলেছে।
এর মধ্যে আগামী ৫০ দিন ব্যাঙ্কগুলোতে ভিড় উপচে পড়বে ধরেই নেওয়া যায়। ব্যাঙ্কের শাখাগুলো যাতে এই ভিড় সামাল দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে পারে, সে জন্য বুধবার (৯ নভেম্বর) সারাদেশে ব্যাঙ্কগুলোতে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই নাটকীয় ঘোষণা সারা ভারতকে কার্যত চমকে দিয়েছে বলা চলে। কেউই আশা করেনি কালো টাকা ঠেকাতে সরকার এত চরম একটা পদক্ষেপ নিতে পারবে।
ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সিদ্ধান্তের ভালমন্দ নিয়ে ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে তর্ক-বিতর্কের ঝড়।