চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে (জুলাই-অক্টোবর) রফতানি আয় বেড়েছে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ। এ সময়ে রফতানি আয় হয়েছে এক হাজার ৭৯ কোটি ১৬ লাখ মার্কিন ডলার। তবে রফতানি আয় লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে আছে।

অন্যদিকে, একক মাস হিসেবে সর্বশেষ অক্টোবর মাসে রফতানি আয় আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ১৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেড়েছে।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক হাজার ১৫৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে এক হাজার ৭৯ কোটি ১৬ লাখ ডলার। আর গত বছরের একই সময়ে আয় হয়েছিল এক হাজার ১৩ কোটি ৪ লাখ ডলার।

অন্যদিকে, অক্টোবরে আয় হয়েছে ২৭১ কোটি ২৮ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৬৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার। গত বছর অক্টোবরে আয়ের পরিমাণ ছিল ২৩৭ কোটি ১৫ লাখ ডলার।

প্রধান রফতানি পণ্য পোশাক খাতের আয় ধারাবাহিকভাবে ভাল হওয়ায় রফতানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

এ প্রসঙ্গে বেসরকারী গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তাফিজুর রহমান বাসসকে বলেন,বাংলাদেশের রফতানি খাত মূলত পোশাক নির্ভর। রফতানিতে পোশাক খাতের অবদান দিন দিন বাড়ছেই।এ কারনেই রফতানি আয়ে উল্লেখ করার মত প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হচ্ছে। তিনি রফতানি আয় আরো বাড়াতে প্রচলিত বাজার ছাড়াও অনেক নতুন বাজারের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পোশাকের পাশাপাশি অন্য পণ্যে মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন।

বাংলাদেশ রফতানিকারক সমিতির (ইএবি) সভাপতি আব্দুস সালাম মূর্শেদী বলেন,রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে পোশাক খাত দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তবে পোশাক ছাড়া অন্যান্য খাতের রফতানি আয় আরো বাড়াতে হবে।এজন্য তিনি পোশাকের পাশাপাশি অন্যান্য শিল্প পণ্যের ক্ষেত্রে সরকারের নীতি সহায়তাসহ প্রনোদনা দেওয়ার সুপারিশ করেন। ইপিবির হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী,পোশাক খাতের নিট পণ্য (সোয়েটার, টি-শার্ট জাতীয় পোশাক) প্রবৃদ্ধি ও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় দুই-ই বেড়েছে।৪৪৩ কোটি ৬০ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রফতানি আয় দাঁড়িযেছে ৪৫৩ কোটি ৫১ লাখ ডলার।প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

আলোচ্য সময়ে ওভেন পণ্যেও (শার্ট, প্যান্ট জাতীয় পোশাক) রফতানি আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ।৫০৭ কোটি ৫০ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় কিছুটা কম হয়েছে।এ সময়ে ওভেন পণ্য রফতানি হয়েছে ৪২৮ কোটি ৬৩ লাখ ডলার।

জুলাই-অক্টোবর সময়ে বড় পণ্যের মধ্যে পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি আয় বেড়েছে।এই খাতে রফতানি আয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৯ কোটি ৬২ লাখ ডলার, যার প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ১৫ শতাংশ। চামড়া ও চামড়জাত পণ্যের প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ।এ সময়ে ৪২ কোটি ৮৫ লাখ ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি হয়েছে। এছাড়া মাছ রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে উল্লেখ করার মত।এসময়ে ১৯ কোটি ৬৬ লাখ ডলারের মাছ রফতানি হয়েছে।এতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ।পাশাপাশি আসবাবপত্র, প্লাস্টিক এবং রাসায়নিক পণ্য ও শুকনো খাবারের রফতানি বেড়েছে। তবে হোম টেক্সটাইলসহ বেশ কয়েকটি পণ্য রফতানি গতবছরের তুলনায় কমেছে।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031