গাজীপুরের কালিয়াকৈরে স্কুলছাত্রী মুন্নী আক্তারকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল ছেলেটির বিরুদ্ধে। এবার আত্মহত্যা করেছে সেই ছেলেটিও। আরাফাত নামের ছেলেটি একই এলাকার বাসিন্দা আতাউর রহমানের ছেলে। সেও স্কুলছাত্র। পুরো ঘটনায় দু’টি পরিবারের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য। মেয়েটির পরিবারের দাবি, তাকে উত্ত্যক্ত করতো আরাফাত। কিন্তু ছেলেটির পরিবার বলছে, তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কালিয়াকৈর থানার উপপরিদর্শক মোশারফ হোসেন জানান, গতকাল সকালে কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুরের রতনপুর এলাকায় ফুফুর বাড়িতে আরাফাতের ঝুলন্ত মরদেহ দেখে পরিবারের লোকজন পুলিশে খবর দেয়। ফুফুর বাসায় ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না জড়িয়ে আত্মহত্যা করে আরাফাত। তিনি বলেন, পুলিশ যাওয়ার আগেই তার পরিবার ফুফুর বাড়ি থেকে আরাফাতের লাশ তার নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখান থেকে পুলিশ লাশটির সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর প্রথমে থানায় নিয়ে যায়। পরে ময়না তদন্ত করাতে পাঠায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে।
এর আগে গত মঙ্গলবার কতুবদিয়া এলাকায় নিজ ঘর থেকে কাঁচামাল ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলামের মেয়ে মুন্নী আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত মুন্নী আক্তার চাপাইর বিবি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণিতে পড়াশোনা করতো। স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার ভোরে আরাফাতকে মুন্নীদের বাড়ির কাছে দেখতে পান মুন্নীর মা রিমা। এত সকালে সে এখানে কি করছে এমন কথা মুন্নীর মা জিজ্ঞাসা করতেই আরাফাত দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে মুন্নীর ঘরে গিয়ে খাটের উপর গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় মেয়েকে পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানার এসআই আবদুল্লাহ আল তাবির মুন্নীর নিজ ঘরের বিছানার উপর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে। প্রথমে মুন্নীর লাশ উদ্ধার করে থানায় নিতে চাইলে এলাকার প্রভাবশালী লোকজন তাতে বাধা দেয়। পরে পুলিশের সংখ্যা আরো বাড়িয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। বাধা দিতে গেলে স্থানীয় একজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
মুন্নীর ভাই রিপন জানান, স্কুলে যাওয়া-আসার পথে চাপাইর এলাকার শ্রমিক পরিবহন নেতা আতাউর সরকারের ছেলে আরাফাত সরকার মুন্নীকে উত্ত্যক্ত করত। এ ব্যাপারে আরাফাতের স্বজনদের কাছে বিচার দিলেও তারা বিষয়টি আমলে নেননি। বরং এ নিয়ে মুন্নী ও তার বাবা শহীদকে নানা ধরনের হুমকি দেয়া হয়। এক বছর ধরে মুন্নীকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে আরাফাতের যন্ত্রণায় স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল বলে দাবি তার।
অন?্যদিকে ছেলে আরাফাতের পরিবারের লোকজন বলছেন, আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়া দুজনের মধ্যে পরিবারের অমতে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। মেয়েটির আত্মহত?্যার খবর পেয়ে ছেলেটিও একই কাজ করেছে। মুন্নীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল বলে দাবি করেছেন আরাফাতের মা। তার মা বলছেন, এই সম্পর্ক নিয়ে তাদের নিজেদের এবং অভিভাবকদের আপত্তি ছিল। মঙ্গলবার রাতে তার ছেলে আরাফাত গোপনে ওই মেয়ের বাড়িতে যায়। তাদের দুজনকে এক ঘরে পেয়ে মেয়েটির পরিবারের লোকজন মারধর করে ছেলেটিকে তাড়িয়ে দেয়। এরপর মেয়েটির আত্মহত্যার খবর শুনে তাদের ছেলে আরাফাত তার ফুপুর বাড়িতে গিয়ে নিজেও আত্মহত্যা করে।
M | T | W | T | F | S | S |
---|---|---|---|---|---|---|
1 | ||||||
2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 |
9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 | 15 |
16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 | 22 |
23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 | 29 |
30 | 31 |