আজ ২৬ অক্টোবর, ১৮৭৩ সালের এই দিনে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া মিয়াবাড়ির মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন অবিভক্ত বাংলার অবিসংবাদিত নেতা শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক। এ মহান নেতার জন্মস্থানের ভবনগুলো অবহেলায় পড়ে রয়েছে। দেশ বিদেশের অসংখ্য পর্যটক এখানে এসে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

 

সাতুরিয়া গ্রামের শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের জন্মভবনটি প্রত্নসম্পদ হিসেবে ঘোষণার প্রায় ৬ বছর হলেও সংরক্ষণের কাজ শুরু হয়নি। নামে মাত্র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও আতুরঘরটির ছাদ সংস্কার হলেও অযত্ন আর অবহেলার মধ্যে পড়ে রয়েছে বাঙালি জাতীয়তাবাদের অন্যতম প্রবক্তা ও বাংলার অবিসংবাদিত এ নেতার বিভিন্ন স্মৃতি চিহ্নগুলো। ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন স্থাপনা।

 

তথ্য মতে, এ দিন মধ্যরাতে ‘বাংলার বাঘ’ জন্ম নেন সাতুরিয়ার নানাবাড়িতে। বাড়িটি ‘সাতুরিয়া মিয়াবাড়ি’ নামে পরিচিত। শেরে বাংলার শৈশব ও কৈশোরের অনেকটা সময় কেটেছে এ গ্রামে। এখানকার একটি মক্তবে তিনি লেখাপড়া করেন। যে পুকুরে তিনি সাঁতার কাটতেন তা আজও বিদ্যমান। ১৯৪১ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন সাতুরিয়া এমএম হাই স্কুল। এক সময় তিনি সাতুরিয়াকে রাজনীতির অন্যতম কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহার করেন। এছাড়াও সাতুরিয়ায় ছড়িয়ে রয়েছে তার অনেক স্মৃতি। মহান এ নেতার জন্ম নেওয়া ভবনসহ মোগল আমলে নির্মিত আরও কয়েকটি ভবন এখনও দাঁড়িয়ে রয়েছে। তবে অধিকাংশই জরাজীর্ণ। দীর্ঘদিন সংস্কার করা হয়নি। ইমারতগুলো যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে। ইতোমধ্যে অনেক স্মৃতিচিহ্ন হারিয়েও গেছে।

 

শেরে বাংলার জন্মভবনে দীর্ঘদিন যাবত্ বাস করছেন তার নিকটাত্মীয় হোসনে আরা বেগম বুলু ও তার পরিবারের সদস্যরা। তারাও চান জরুরিভাবে ভবনটি সংস্কার করা হোক। সম্প্রতি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়ে জন্মস্থানে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও জন্মগৃহের ছাদটি নামমাত্র সংস্কার করে।

 

এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শা মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ শেরে বাংলার জন্মস্থানে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছে। আশা করি দ্রুত তার জন্মস্থানটি সংরক্ষণ এবং একটি জাদুঘর নির্মাণ করা হবে।

 

এদিকে, সাতুরিয়ার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নসহ শেরে বাংলার নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন ঢাকাস্থ ঝালকাঠি জেলা সাংবাদিক সমিতির নেতারা। নেতৃবৃন্দ জানান, অবহেলিত এ এলাকাটির চতুর্দিকের ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই। কাজেই এই এলাকাটিতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হলে এক দিকে যেমন শেরে বাংলার জন্মস্থানটি সুরক্ষিত থাকবে, পাশাপাশি ওই অঞ্চলের ছেলে-মেয়েরা সহজে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে সমাজে ভূমিকা রাখতে পারবে।
Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031