মদ পানের পারমিট। কিছুটা অবাক হওয়ার মতো। তবে ঘটনা সত্য। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বিভিন্ন ব্যক্তির আবেদন বিবেচনায় নিয়ে মদ পানের পারমিট দিয়ে থাকে। কোনো ব্যক্তি এ ধরনের পারমিট চেয়ে আবেদন করলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর নিজস্ব লোকবল দিয়ে ওই ব্যক্তির আর্থিক ও সামাজিক অবস্থানের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে। তথ্য সন্তোষজনক মনে হলে পারমিট দেয়া হয়। তবে পারমিট দেয়ার পরও পর্যবেক্ষণে রাখা হয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে। যদি কারও বিরুদ্ধে অবৈধ মাদকসহ মদের ব্যবসা বা আমদানির অভিযোগ আসে তাহলে তার পারমিট বাতিল করা হয়। দেশে বর্তমানে মদের পারমিট রয়েছে ১৪২২৩ জনের। তারমধ্যে রাজধানী ঢাকায় রয়েছে ৮১০০ জনের। পারমিট পাওয়া নারীর সংখ্যা ৭২৩ জন। জেলা শহরের চাইতে বিভাগীয় শহরগুলোতে কোমল পানীয় মদ পানকারী বেশি। কোনো কোনো জেলায় দেখা গেছে, ৫০ জনেরও নিচে মদ পানকারীর পারমিট রয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ  অধিদপ্তরে সারা দেশের প্রায় ২০০০ হাজারের মতো ব্যক্তি মদ পান করার জন্য পারমিট চেয়েছেন। তাদের ওই আবেদন খতিয়ে দেখছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
এ বিষয়টি জানতে চাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মেহেদী হাসান মানবজমিনকে জানান, উচ্চ ও মধ্যবিত্ত ছাড়া মদের পারমিট দেয় হয় না। তবে বর্তমানে মধ্যবিত্ত লোকদের পারমিট দেয়ার ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। মদের পারমিট নিয়ে কেউ কেউ অবৈধভাবে ব্যবসা গড়ে তোলে। কেউ কেউ পাচারের সঙ্গে যুক্ত হয়। এজন্য আবেদনকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে গভীর তদন্ত করে পারমিট দেয়া হয়। দেশে মদের পারমিট রয়েছে প্রায় ১৪২২৩ জনের।  আবেদন পড়ে রয়েছে প্রায় ২০০০ হাজার জনের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে লাইসেন্স রয়েছে ১৩৯টি মদের বারের। তার মধ্যে ঢাকায় রয়েছে ৫২টি। মদপানকারীরা সেখানে গিয়ে  নির্বিঘ্নে মদ পান করে থাকে। সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বাধা দেয় না। তবে যাদের মদ পানের পারমিট রয়েছে তারা শুধু বার নয়, দেশের যে কোনো স্থান থেকে মদ ক্রয় করে পান করতে পারেন। তিন বছর পর ওই পারমিট নবায়ন করতে হয়।
সূত্র জানায়, মদের পারমিটের আবেদনকারীর আয়ের উৎস, আয়কর সংক্রান্ত কাগজ, পুলিশের ক্লিয়ারেন্স ও জন্ম নিবন্ধন কপি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে জমা দিতে হয়। পরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ওই ব্যক্তি মদের পারমিট পাওয়ার যোগ্য কিনা তা যাচাই-বাছাই করার জন্য মাঠ পর্যায়ে তদন্ত শুরু করে। মদের পারমিট নেয়ার আবেদন উচ্চবিত্ত লোকজনই বেশি করে থাকে। ৩০ বছরের উপরে যাদের বয়স সাধারণত তাদেরই পারমিট দেয়া হয়। তবে ৩০ এর নিচে কোনো তরুণ মদের পারমিটের আবেদন করলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর তার বাবা ও মায়ের ক্লিয়ারেন্স চান। বাবা ও মা যদি ওই ক্লিয়ারেন্স দেন তবে ওই আবেদন মঞ্জুর করা হয়। ৩০ এর নিচে যারা আবেদন করে থাকে তারা সকলেই উচ্চবিত্তের সন্তান। ঢাকায় এর সংখ্যা বেশি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্র থেকে জানা গেছে, অনেকেই মদের পারমিট আর নতুনভাবে নবায়ন করে না। একবার পারমিট নিয়েই তারা বছরের পর বছর কাটিয়ে দেয়।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031