দলটির তৃণমূল নেতারা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বে আনার দাবি জানিয়েছেন । তারা বলেন, ‘জয় দক্ষ, মেধাবী ও যোগ্য। তিনি বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরসূরি। তাকে নেতৃত্বে চাই।’ শনিবার আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে তৃণমূল নেতারা বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পেলে তারা এই দাবি তোলেন।
এর আগে  সজীব ওয়াজেদ জয়কে নেতৃত্বে নিয়ে আসার বিষয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমাদের বয়স হয়ে গেছে। জয়ের মতো তরুণরাই আগামী দিনে দেশ ও রাজনীতিতে নেতৃত্ব দেবেন।’
এ সময় সজীব ওয়াজেদ জয় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য রাখার সুযোগ পেলে প্রথমেই বক্তব্য রাখেন বরিশাল বিভাগের বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকারী সজীব ওয়াজেদ জয় দেশে-বিদেশে ইতোমধ্যে সুনাম কুড়িয়েছেন। তিনি শিক্ষিত, মেধাবী ও যোগ্য। তাকে দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বে আনার দাবি জানাই।’ এই সময় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনার সন্তান জয় আজ ষোলো কোটি মানুষের গর্ব। আপনার অনুপস্থিতিতে আওয়ামী লীগকে এগিয়ে নিতে পারবেন জয়। দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে আপনি যে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন, সে যুদ্ধ শেষ করেই কেবল আপনি বিদায় নিতে পারবেন। এছাড়া আপনাকে আমরা বিদায় দিতে পারব না।।’

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনকে সামনে রেখে যে নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করা হয়েছিল, সেখানে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করা হয়। এর উদ্ভাবক আর কেউ নন, তিনি জয়। জয় ইতোমধ্যেই তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। ভবিষ্যতে নেতৃত্বে তাকে দেখতে চাই।’
রাজশাহী বিভাগের বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দীন বলেন, ‘জয় আমাদের মধ্যমণি। বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকারী। বঙ্গবন্ধুর রক্ত, শেখ হাসিনার সন্তান জয়কে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে নিয়ে এসে উপযুক্ত স্থানে দেওয়া হোক।’
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম বলেন, ‘নেতৃত্ব নির্বাচনে আপনার (শেখ হাসিনা) প্রতি আস্থা আছে। আপনার রানিংমেট কাকে ঠিক করবেন, সেটা আপনিই ভালো বুঝবেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ইতোপূর্বে আপনাকে নেতা নির্বাচনের দায়িত্ব দিয়েছেন, আপনি সে আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে পেরেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘সজীব ওয়াজেদ জয়কে নেতৃত্বে দেখতে চাই। তিনি দায়িত্ব পালন করলে আওয়ামী লীগ আরও এগিয়ে যাবে।’
ঢাকা বিভাগের গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি চৌধুরী এমদাদুল হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক উত্তরসূরি দেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। পরবর্তী সময়ে যিনি নেতৃত্বে আসবেন, তার নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তি আসবে।’
খুলনা জেলার সভাপতি হারুন অর রশীদ বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি গ্রুপ আছে বলেই আওয়ামী লীগ আজ ক্ষমতায়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ থাকলে, বিশ বছরেও কেউ আওয়ামী লীগকে সরাতে পারবে না ।’ আগামী দিনের কমিটিতে জয়কে সম্মানজনক জায়গা রাখার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জয় আগামী দিনের পাইওনিয়র। আওয়ামী লীগের শত্রু বাইরের কেউ নয়। আমরাই আমাদের শত্রু। কারও পেছনে ছুরিকাঘাত করব না। নিজেরাই নিজেদের সমস্যার সমাধান করব, এই ব্রত নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’
এর আগে আগে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, ‘সজীব ওয়াজেদ জয়কে যেকোনও গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখতে চাই।’ যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক বলেন, ‘আওয়ামী লীগের তরুণ নেতৃত্বের অহঙ্কার জয়। তিনি আগামী দিনেরে নেতৃত্ব আসবেন, সে বিশ্বাস ও সম্ভাবনা নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।’
তৃণমূল নেতাদের বক্তব্যের আগে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দ্বিতীয় দফা বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, ‘সজীব ওয়াজেদ জয়কে বাংলাদেশের উন্নয়নের নেতৃত্ব দিতে হবে। জয় ও জয়ের বন্ধুরা আগামী দিনের নেতৃত্বে আসবেন। আমাদের বয়স হয়ে গেছে। জয়ের মতো তরুণরাই আগামী দিনে দেশ ও রাজনীতিতে নেতৃত্ব দেবেন।’
সজীব ওয়াজেদ জয়কে উদ্দেশ করে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘জয় তুমি দাঁড়াও। তোমাকে কাউন্সিলররা দেখতে চায়। আগামী দিনের বাংলাদেশে তোমাকেই নেতৃত্ব দিতে হবে। ধারাবাহিকতায় দেশ পরিচালনার দায়িত্ব তোমাকে নিতে হবে। আমরা এক সময় চলে যাব।’

প্রথম দিনের বক্তব্য শেষে সভাপতি শেখ হাসিনা বিকাল ৫টার দিকে কাউন্সিল অধিবেশন আগামীকাল সকাল সাড়ে নয়টা পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘আগামীকাল জেলা নেতারা তিন মিনিট করে বক্তব্য রাখার সুযোগ পাবেন। আশা করি, আপনারা এই সময়ের মধ্যে বক্তব্য রাখবেন এবং জেলার সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করবেন। এরপর আমরা গঠনতন্ত্র সংশোধ ও নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যাব। নতুন নির্বাচনের জন্য যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে, তারা নির্বাচন প্রক্রিয়া অনুসরণ করবেন।’
উল্লেখ্য, রবিবারের অধিবেশন রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত হবে।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031