দেশে আর দারিদ্র ও গৃহহীন মানুষ থাকবে না সরকার তাদের ঘর করে দেবে। দরিদ্রদের সহযোগিতা করবে যাতে তারা স্বাবলম্বী হতে পারে। দেশকে শতভাগ দারিদ্রমুক্ত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ।রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে দেয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সকালে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। পরে সম্মেলন সংগীত ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা শেষে শোক প্রস্তাব ও সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট পেশ করা হয়। বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। সম্মেলনে ১০টি দেশের প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন। সম্মেলনে প্রথম অধিবেশনে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী দলের নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে বলেন, স্ব স্ব এলাকায় কতোজন দরিদ্র মানুষ আছে, গৃহহারা মানুষ আছে, কারা হতদরিদ্র তাদের তালিকা বানান, তাদের জন্য বিনা পয়সায় ঘর করে দেবো। জনগণের কল্যাণ করা আমাদের দায়িত্ব। আমরা কাজ করলে দেশে আর দারিদ্র থাকবে না। দারিদ্রের হার এখন ২২ ভাগে কমিয়ে এনেছি। বাংলাদেশে দারিদ্র বলতে কিছু থাকবে না। প্রতিটি মানুষ সুশিক্ষায় শিক্ষিত হবে। বাংলাদেশ থেকে পুষ্টিহীনতা দূর করবো। শতভাগ স্যানিটেশন নিশ্চিত করবো। বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করবো। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাশ রুম করে দেবো। কর্মক্ষেত্রে নারী পুরুষ বৈষম্য থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রী ১৫ই আগস্টের স্মৃতিচারণ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশকে যখন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, ৭৫ এর ১৫ই আগস্ট হত্যা করা হলো বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের। আমার ১০ বছরের ছোট ভাই রাসেলও রেহাই পেলো না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ উপ মহাদেশের মধ্যে প্রাচীন রাজনৈতিক দলগুলোর একটি। বাংলাদেশ একটি জাতি রাষ্ট্র। দেশের যা অর্জন হয়েছে তা আওয়ামী লীগের মাধ্যমে হয়েছে। আওয়ামী লীগই মানুষকে ঐক্যব্ধ করে এ অর্জন এনে দিয়েছে। ৫২‘ ভাষা আন্দোলন ৬৬’র ছয় দফা, নানা আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
তিনি বলেন, এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতির পিতা স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দিয়েছিলেন। তার ডাকে বাঙালি জাতি ঝাপিয়ে পড়েছিল মুক্তি সংগ্রামে। ২৬শে মার্চ তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। অনেক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র আমরা প্রতিষ্ঠিত করেছি। বলেই ২১বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করতে পেরেছিল। আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর মানুষ স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল। ২০০১ সালে যখন বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসে তখন মানুষের সেই স্বপ্ন ভেঙে যায়। ২০০৮ সাল পর্যন্ত এদেশের মানুষের জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ২০০৯ সালে আবার আমরা সরকার গঠন করি। এরপর থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আবার বাংলাদেশ গড়ে উঠছে। আমরা সংবিধান সংশোধন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠা করি।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, আমি জাতির পিতার সন্তান হিসেবে শিক্ষা নিয়েছি। দেখেছি তিনি কিভাবে এদেশের মানুষকে ভালবেসেছেন। পিতার কাছ থেকে শোনেছি এদেশের শোষিত বঞ্চিত মানুষের কথা। তাদের কথা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বার বার জেলে গেছেন। কিন্তু কখনও তিনি আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি। যে শিক্ষা পিতার কাছ থেকে পেয়েছিলাম সেই শিক্ষা নিয়েই আমি আমার কার্যক্রম শুরু করি। এবং কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমি দেশে এসেছিলাম সব হারানোর ব্যাথা নিয়ে। দেশে ফিরে আমি বাংলার মানুষের ভালবাসা পেয়েছি। তাদের কাছে আমি পিতা, মা, ভাইয়ের স্নেহ পেয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে আর কোন দরিদ্র মানুষ যাতে না থাকে সেজন্য আমরা ৯৬ সালে সামাজিক নিরাপত্তা বলয় গড়ার উদ্যোগ তৈরি করেছিলাম। যার শুভফল এদেশের মানুষ পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের স্থান বাংলাদেশের মাঠিতে হবে না। বাংলাদেশকে শান্তির দেশ হিসেবে গড়ে তুলব।
দলীয় সভানেত্রীর বক্তব্যের পর প্রথম অধিবেশন মুলতবি করা হয়। দুপুরের খাবার ও নামাজের পর বিকাল সাড়ে দিনটায় দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হবে।
M | T | W | T | F | S | S |
---|---|---|---|---|---|---|
1 | 2 | 3 | 4 | 5 | ||
6 | 7 | 8 | 9 | 10 | 11 | 12 |
13 | 14 | 15 | 16 | 17 | 18 | 19 |
20 | 21 | 22 | 23 | 24 | 25 | 26 |
27 | 28 | 29 | 30 | 31 |