বিএনপি ইতিবাচক রাজনীতির স্বার্থে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় কাউন্সিলে যাবে । দলটির একাধিক দায়িত্বশীল নেতা জানান, আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে দাওয়াত পাওয়ার পর এ নিয়ে দলের নীতিনির্ধারক ফোরামের সদস্যসহ কয়েকজন সিনিয়র নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বেশিরভাগ নেতাই আমন্ত্রণ রক্ষার ব্যাপারে ইতিবাচক মত দিয়েছেন। রাতে এ ব্যাপারে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে মহাসচিব মির্জা আলমগীরের আলোচনা করারও কথা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তারা কেউ যাচ্ছেন না আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে। তবে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে অংশগ্রহণের জন্য প্রতিনিধি দলের সদস্য নির্বাচন নিয়েও আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে। চেয়ারপারসনের ইতিবাচক নির্দেশনা পেলে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য বা একজন ভাইস চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে গঠিত বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে অংশ নিতে পারেন। দলটির তরফে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ব্যাপারে ঘোষণা না এলেও আমন্ত্রণ রক্ষার ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসার জোর সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে একজন সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে টেলিফোন আলাপেও এ ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছেন বিএনপি মহাসচিব। আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে যাচ্ছেন কি না?- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানিয়েছেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বিষয়টি সন্ধ্যা নাগাদ জানাবেন বলে তিনি আশা করছেন। সিনিয়র নেতারা এই আমন্ত্রণের বিষয়ে খুবই ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন চেয়ারপারসন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাংগঠনিক সম্পাদকসহ কয়েকজন সিনিয়র নেতা জানান, পরিস্থিতির দাবি মেটাতে তারাও ইতিবাচক সিদ্ধান্ত প্রত্যাশা করছেন। তবে চেয়ারপারসনের সঙ্গে মহাসচিবের আলোচনায় সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে। এদিকে রাজনৈতিক মহলও মনে করছেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির উত্তরণ ও ইতিবাচক রাজনীতির স্বার্থে বিএনপির সামনে এটি একটি বিরাট সুযোগ। সামনে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনসহ নির্বাচন ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে আলোচনার দুয়ার খুলতে এ সুযোগ নিতে পারে বিএনপি। এদিকে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, আমরাও আওয়ামী লীগকে কাউন্সিলে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আসেনি। এমনকি ফোন করে দুঃখও প্রকাশ করেনি। তবে বিএনপি তাদের মতো নয়। বিএনপি সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে আমরা কি করি জনগণ দেখতে পারবে। হান্নান শাহর স্মরণে জাতীয়তাবাদী বন্ধু দল আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রসঙ্গে আলাল বলেন, সম্মেলন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ঢাকা শহরে এমন অবস্থা সৃষ্টি করেছে দেখে মনে হচ্ছে সম্মেলন তাদের নয়, র্যাব, পুলিশ ও ডগ স্কোয়াডের সম্মেলন। আর এ সম্মেলনের সভাপতি হবেন র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক হবেন পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। তারা এখন থেকেই পথে পথে চেকপোস্ট বসিয়ে জনসাধারণকে হয়রানি করছে। আওয়ামী লীগ দাবি করে তারা জনপ্রিয় দল, জনপ্রিয় দলের সম্মেলনের নিরাপত্তা নিয়ে এত ভয় কেন, কাদের ভয় পাচ্ছেন তারা! কাউন্সিলে নেত্রী যাকে যে পদ দেবেন তিনি সে পদই পাবেন- সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে আলাল বলেন, আপনাদের নেত্রীই যদি সব পদ দিতে পারেন তাহলে চাঁদাবাজি করে জনগণের পকেট কেটে এত বড় কাউন্সিল করার কোনো অর্থই হয় না। রাজনীতির একটা ব্যাকরণ আছে, সেটা মেনে চলুন। উল্লেখ্য, অতীতে আওয়ামী লীগ-বিএনপি দুইদলই তাদের কাউন্সিলে পরস্পরের শীর্ষ নেতাকে দাওয়াত করেছেন। কিন্তু কেউ অন্য দলের কাউন্সিলে অংশ নেননি। তবে দুই দলের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের রেওয়াজ রয়েছে। ২০০৯ সালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত বিএনপির কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক অসীম কুমার উকিলসহ কয়েকজন অংশ নিয়েছিলেন। সেবার অসীম কুমার বিএনপির সম্মেলনে অতিথি হিসেবে বক্তব্যও দিয়েছিলেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ তাদের গত সম্মেলনে বিএনপিকে আমন্ত্রণও জানায়নি। চলতি বছরের মার্চে অনুষ্ঠিত বিএনপির কাউন্সিলে কোনো প্রতিনিধিও পাঠাননি। কিন্তু এবার বিএনপির শীর্ষ দুই নেতাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
M | T | W | T | F | S | S |
---|---|---|---|---|---|---|
1 | 2 | 3 | 4 | 5 | ||
6 | 7 | 8 | 9 | 10 | 11 | 12 |
13 | 14 | 15 | 16 | 17 | 18 | 19 |
20 | 21 | 22 | 23 | 24 | 25 | 26 |
27 | 28 | 29 | 30 | 31 |