একটি চীনা কোম্পানি প্রায় সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকার জয়দেবপুর টু ঈশ্বরদী সেকশনে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণ করবে। জি টু জি ভিত্তিতে এর কাজ করবে চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন (সিসিইসিসি)। এটি বাস্তবায়নের জন্য একটি প্রস্তাব সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। আজ সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে বিষয়টি অনুমোদনের জন্য উঠছে। ২০১৪ সালের ২৬শে অক্টোবর প্রকল্পটি নিয়ে প্রস্তাবিত কোম্পানির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে রেলপথ মন্ত্রণালয়। রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে ‘রিজিওনাল কো-অপারেশন অ্যান্ড ইন্ট্রিগ্রেশন প্রজেক্ট (আরসিআইপি)-রেল কমপোনেন্ট শিরোনামে কারিগরী সহায়তা প্রকল্পের অধীনে নিয়োজিত কনসালট্যান্সি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ‘জয়দেবপুর- ঈশ্বরদী সেকশনে ডুয়েল গেজ ডাবললাইন নির্মাণ’ সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী সেকশন বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি ব্যস্ত রুট। রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, দিনাজপুর, লালমনিরহাট এবং উত্তরাঞ্চলের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহরের সঙ্গে রাজধানী ঢাকা অভিমুখী সব যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্টেন এ রুটে চলাচল করে। এ কারণে ঈশ্বরদী- জয়দেবপুর রুটের সেকশনাল ক্যাপাসিটি এরই মধ্যে পূর্ণ হয়েছে। ফলে নতুন কোন ট্টেন চালু করা সম্ভব হবে না। এ কারণেই ডাবল লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। রেলপথ মন্ত্রণালয় মনে করছে, মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয়ে জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী সেকশনে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মিত হলে আন্তঃনগর ট্রেনের মাধ্যমে ঢাকা থেকে রাজশাহী সাড়ে ছয় ঘণ্টার বদলে চার ঘণ্টায় এবং ঢাকা থেকে খুলনা, দিনাজপুর ও লালমনিরহাট ১০ ঘণ্টার বদলে আট ঘণ্টায় এবং ঢাকা থেকে রংপুর ও দিনাজপুর নয় ঘণ্টার বদলে সাত ঘণ্টায় পৌছানো সম্ভব হবে। বর্তমানে পার্বতীপুর-দিনাজপুর- পঞ্চগড় এবং কাঞ্চন-বিরল বর্ডার সেকশনকে ডুয়েলগেজে রূপান্তরের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এটি শেষ হলে পঞ্চগড়- ঢাকা রুটে নতুন যাত্রী ট্রেনসহ বিরল বর্ডার দিয়ে আন্তঃদেশীয় মালবাহী ট্রেন চালুর প্রয়োজন হবে। কিন্তু এ সেকশনের ক্যাপাসিটি না বাড়ালে নতুন ট্রেন চালু করাও সম্ভব হবে না। এ সেকশনের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৭৩ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার। গত ১০ ই অক্টোবর রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠানো সার সংক্ষেপে বলা হয়েছে, জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী সেকশনে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মিত হলে ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের রুট- ১, ২ ও ৩ এর মাধ্যমে আন্তঃএশীয় রেল নেটওয়ার্কে উপনীত হবে। ফলে অভ্যন্তরীণ ও আন্তঃদেশীয় মালবাহী ও কন্টেইনার পরিচালনা করা সম্ভব হবে। এটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। মন্ত্রিসভা কমিটির সার সংক্ষেপে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। দেশের বিভাগীয় শহর রাজশাহী, খুলনা ও রংপুর এবং উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোর সঙ্গে আধুনিক সময়সাশ্রয়ী ও উন্নত রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য প্রকল্পটি তৈরি করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ঢাকা থেকে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের যাত্রী ও মালামাল পরিবহনে ভ্রম সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে। পাশাপাশি বেশি যাত্রী ও মালামাল পরিবহন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এটা সরকারের রাজস্ব আয় বাড়িয়ে দেবে। এর আগে ২০১৫ সালের ১৫ই জানুয়ারি প্রায় সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকার পিডিপিপি পরিকল্পনামন্ত্রী অনুমোদন করেন। এরপর ১৮ই জানুয়ারি অনুমোদিত পিডিপিপি অর্থায়ন অনুসন্ধানের জন্য অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে পাঠায়। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ প্রকল্পটিতে অর্থায়নের জন্য গত ২৪শে ফেব্রুয়ারি ঢাকাস্থ গণচীনের দূতাবাসের কাছে অনুরোধপত্র পাঠায়। গত ২২শে আগস্ট চীনের রাষ্ট্রদূত বরাবরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২৫টি অগ্রাধিকার প্রকল্পের তালিকা পাঠিয়ে তাতে দ্রুত অর্থায়নের অনুরোধ জানান। অর্থমন্ত্রীর ওই তালিকায় জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী সেকশনে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন প্রকল্পটি রয়েছে। অর্থমন্ত্রীর এ চিঠি’র কারণে প্রকল্পটিতে গতি পেয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
M | T | W | T | F | S | S |
---|---|---|---|---|---|---|
1 | ||||||
2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 |
9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 | 15 |
16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 | 22 |
23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 | 29 |
30 | 31 |