আমি গ্রামে গ্রামে ঘুরেছি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন। এমন কোনো গ্রাম নেই, যেখানে কওমি মাদ্রাসা নেই। দেশের সব জায়গায় কওমি মাদ্রাসায় লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে পড়াশোনা করছে। তাহলে কেন তারা স্বীকৃতি পাবে না।
সোমবার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটে ‘কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা: গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কওমি সনদের স্বীকৃতি দিতে খুবই আন্তরিক। তিনি আমাকে ডেকেছেন। কওমি আলেমদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। তিনি কওমি আলেমদেরকে বলেছেন শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বসে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে। তাই আমি আপনাদেরকে বলবো খুব দ্রুত সময়ে সবাইকে নিয়ে বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বসে বিষয়টি সুরাহা করুন। আপনাদের স্বীকৃতি হবে। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে ওয়াদাবদ্ধ।’
আসাদুজ্জামান বলেন, ‘সবার কাছে ঐক্যের বার্তা পৌঁছে দেন। তবে সবাইকে যে আসতে হবে তা নয়। আমি কী বলতে চেয়েছি তা আপনারা আশা করি বুঝতে পারছেন।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন কথায় উপস্থিত কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা হাততালি ও স্লোগান দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে উৎসাহ যোগান।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী ইসলাম ও আলেম ভক্ত। তিনি সকালে কোরআন তেলাওয়াত ও নামাজ পড়ে দিনের কাজ শুরু করেন। প্রধানমন্ত্রী আপনাদেরকে সঙ্গে নিয়েই চলতে চান। আপনারা ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন। ইসলামের সত্যবাণী প্রচার করবেন। এটাই আমরা চাই। আপনার শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বসুন। আপনাদের দাবি অপূরণীয় থাকবে না।’
কওমি শিক্ষাসনদ স্বীকৃতি বাস্তবায়ন পরিষদ আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম মাওলানা ফরীদউদ্দীন মাসঊদ। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রামের জামিয়াতুল আরাবিয়া আল ইসলামিয়া জিরি’র মহাপরিচালক শাহ মুহাম্মদ তৈয়্যব।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মতিউর রহমান বলেন, ‘কওমি সনদের স্বীকৃতি দিতে সরকার আন্তরিক চেষ্টা চালাচ্ছে। আমিও মনে করি তাদের এটা দীর্ঘদিনের দাবি। দাবির যথেষ্ট যৌক্তিকতা আছে। আশা করছি খুব শিগগিরই আপনাদের স্বীকৃতি মিলবে।’
সেমিনারে কওমী শিক্ষাসনদ স্বীকৃতি বাস্তবায়ন পরিষদ ১১ দফা শর্তে সনদের স্বীকৃতি চান। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- কওমি মাদ্রাসা কখনো এমপিওভুক্ত হবে না, মাদ্রাসা পরিচালনায় কোনো হস্তক্ষেপ করা যাবে না, কওমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগে কওমি কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ করবে, সেখানে কোনো সরকারি কর্মকর্তা থাকবে না, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কমিশন কর্তৃক প্রণীত ও দাখিলকৃত সিলেবাসকেই কওমি সিলেবাস হিসেবে বহাল রাখতে হবে।