চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজের কাছে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন বিচারিক হাকিম আদালত র্যাব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত আনোয়ারা উপজেলার তালসরা দরবারের টাকা লুটের মামলাটি বিচার শুরুর জন্য প্রস্তুত করে বিচারিক আদালত ।
রোববার (১৬ অক্টোবর)শুনানি শেষে চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আ স ম শহীদুল্লাহ কায়সার এ আদেশ দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের পরিদর্শক (প্রসিকিউশন) এইচ এম মশিউর রহমান জানান, মামলাটি বাতিলের আবেদন খারিজ করে দেয়া হাইকোর্টের আদেশ রোববার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। শুনানি শেষে আদালত মামলার নথি অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর জন্য চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজের কাছে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। লুটের আসামি র্যাব কর্মকর্তা বর্তমানে জামিনে মুক্ত।
তিনি আরো জানান, আগামী ২৯ নভেম্বর ওই মামলার অভিযোগপত্রসহ নথি বিচারিক আদালতে স্থানান্তরের আদেশ দেন।শুনানির জন্য আগামী ২৯ নভেম্বর দিনও ঠিক করে দেন তিনি।
চাঞ্চল্যকর এই মামলার অভিযোগপত্র দাখিলের পর আসামি ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট (চাকরিচ্যুত)শেখ মাহমুদুল হাসানের বাতিলের আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের আদেশে ২০১২ সালের ২৮ নভেম্বর থেকে এর কার্যক্রম স্থগিত ছিল।চলতি বছরের ১৭ আগস্ট বাতিলের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন বিচারপতি এম মোয়াজ্জেম হোসেন ও বিচারপতি মো.বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ।
২০১১ সালের ৪ নভেম্বর মাজারটিতে র্যাব সদস্যরা গিয়ে তল্লাশির নামে ২ কোটি ৭ হাজার টাকা লুটের অভিযোগে ২০১২ সালের ১৩ মার্চ আনোয়ারা থানায় র্যাবের ১২ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলাটি হয়।
ঘটনার প্রায় সাত মাস পর ২০১২ সালের ১৩ মার্চ দরবারের গাড়িচালক মো.ইদ্রিস বাদি হয়ে ১২ জনের বিরুদ্ধে আনোয়ারা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।২০১২ সালের ১৫ জুলাই সাতজন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন আনোয়ারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুস সামাদ।
অভিযোগপত্রে যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন,র্যাব-৭ এর সাবেক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল (চাকরিচ্যুত) জুলফিকার আলী, উপ-অধিনায়ক ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট (চাকরিচ্যুত) শেখ মাহামুদুল হাসান মজুমদার, সুবেদার মোহাম্মদ আবুল বশর, এস আই তরুন কুমার বসু, সোর্স মো. দিদারুল আলম,মো. আনোয়ার ও মানব বড়ুয়া।অভিযোগপত্রে ৪২ জনকে সাক্ষী করা হয়েছিল।
২০১২ সালের ৩০ জুলাই অভিযোগপত্রটি আদালতে নথিভুক্ত হয় এবং ২৮ আগস্ট গ্রহণযোগ্যতার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে হাইকোর্টের আদেশে মামলাটির কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে করা প্রধান দুই আসামির আবেদন বাতিল হওয়ায় প্রায় চার বছর পর আবার সচল হতে চলেছে মামলাটি।
চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলাটির বিচার হবে। চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ নুরুল হুদা বদলি হওয়ায় বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সিরাজুদ্দৌলা কুতুবী।
২০১২ সালের মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ঢাকার মগবাজার থেকে গ্রেপ্তার হন জুলফিকার। তবে ২১ জুন উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে মুক্ত হন তিনি।