পল রায়ান তিনি আর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাদের দলীয় প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন করবেন না। রিপাবলিকান দলের সবচেয়ে সিনিয়র নেতা ও প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার স্পষ্ট করে বলেছেন, তার এমন বক্তব্যের পর রিপাবলিকানদের মধ্যে এক রকম ‘যুদ্ধাবস্থা’ বিরাজ করছে। নিউ ইয়র্ক থেকে অ্যানড্রু বানকোমবে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টে এভাবেই তুলে ধরেছেন রিপাবলিকান দলের বর্তমান অবস্থা। তিনি লিখেছেন, দলের নির্বাচিত সবচেয়ে সিনিয়র নেতার ওই বক্তব্যের পর ডনাল্ড ট্রাম্প ও দলের শীর্ষ নেতার মধ্যে ‘যুদ্ধ শুরু হয়েছে’। ডনাল্ড ট্রাম্পের নারী নিয়ে অশালীন মন্তব্যের অডিও ভিডিও প্রকাশ পাওয়ার পর পরবর্তী করণীয় কি হবে তা নিয়ে ইতিহাসবিদরা গলদঘর্ম। ঠিক সে সময়ে পল রায়ান বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীকে সহায়তা করার চেয়ে তিনি কংগ্রেস সদস্যদের তাদের সিট ধরে রাখার জন্য কাজ করবেন। ওয়াশিংটনে রিপাবলিকান দলের রাজনীতিকদের জরুরি এক বৈঠকে এ মন্তব্য করেছেন পল রায়ান। তিনি সেখানে উপস্থিতদের বলেছেন, আপনাদের উচিত হলো আপনাদের নিজেদের আসন ধরে রাখার জন্য কাজ করা। এর পর পরই ডনাল্ড ট্রাম্প টুইটারে পল রায়ানকে আক্রমণ করে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, পল রায়ানের উচিত বাজেট, কর্মসংস্থান, অবৈধ অভিবাসীর ইস্যু নিয়ে ভারসাম্য রক্ষায় অধিক সময় ব্যয় করা। রিপাবলিকান দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়াই করে তার সময় নষ্ট করা উচিত নয়। ওদিকে ট্রাম্পের যারা কঠোর সমর্থক তাদের মধ্যেও পল রায়ানের বক্তব্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ার রিপাবলিকান ডানা রোহরাব্যাচার বলেছেন, দলীয় সদস্যরা ট্রাম্পের কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রাখছেন। এটা কাপুরুষতা। আরিজোনা থেকে প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য ট্রেন্ট ফ্রাঙ্কস বলেছেন, এমন উদ্যোগ নেয়া হলে হিলারি ক্লিনটনের জন্য হোয়াইট হাউজে প্রবেশের পথ পরিষ্কার হয়ে যাবে। ডনাল্ড ট্রাম্প, পল রায়ান ও রিপাবলিকান দলের অন্য নেতাদের মধ্যে সম্পর্ক শীতল পর্যায়ে। এ ছাড়া আর কিছু নয়। রিপাবলিকান দল ট্রাম্পকে বাদ দিয়ে অন্য যেকাউকে মনোনয়ন দিতে ছিল বদ্ধপরিকর। কিন্তু ট্রাম্প তাদের সেই উদ্যোগ সফল হতে দেন নি। ফলে তিনি রিপাবলিকান দলের কর্মকর্তাদের সমালোচনাকে পাত্তাই দিচ্ছেন না। উল্লেখ্য, রিপাবলিকান দল থেকে যখন অন্য সব প্রার্থী ঝরে পড়লেন, ডনাল্ড ট্রাম্প মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠলেন তখনও পল রায়ান বলেছিলেন, তিনি নিউ ইয়র্কের ধনকুবের ট্রাম্পকে অনুমোদন দিতে প্রস্তুত নন। এমন কি এ নিয়ে তিনি তার স্থানীয় একটি পত্রিকায় এ নিয়ে মতামতও লিখেছিলেন। কিন্তু পল রায়ান ও রিপাবলিকান অন্য সিনিয়র নেতাদের প্রতি ট্রাম্প আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, যদি তারা তাকে সহায়তা করতে প্রস্তুত না থাকেন তাহলে তারা যেন নীরব থাকেন।
গত শুক্রবার ২০০৫ সালে ধারণ করা ট্রাম্পের যৌনতা সম্পর্কিত অডিও-ভিডিও প্রকাশের পর যেসব রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্পের সমালোচনা করেছিলেন তার মধ্যে অন্যতম পল রায়ান। ওই অডিও-ভিডিওতে ট্রাম্পকে বলতে শোনা যায়, তিনি একজন বিবাহিত নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। ‘বিচের’ মতো তার পিছনে লেগে ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি সফল হন নি। এ ছাড়া তিনি বলেন, যখন আপনি তারকা হয়ে যাবেন তখন নারীদের নিয়ে যা খুশি তাই করতে পারবেন। এ ছাড়া তিনি সুন্দরী নারীদের প্রতি আকর্ষণ বোধ করেন। এমনকি তাদেরকে চুমু দেন। শনিবার প্রকাশিত হয় একটি অডিও। তাতে শোনা যায় তিনি নিজের মেয়ে ইভানকার শরীরের স্পর্শকাতর অঙ্গ নিয়ে মন্তব্য করছেন। বলছেন, ইভানকা আবেশ সৃষ্টি করতে পারে। এ ছাড়া নারীদের ভোগ করার উপযুক্ত বয়স হলো ৩০ বছর। এমনতরো মন্তব্য প্রকাশের পর রিপাবলিকান দলে ঝড় চলছে। ট্রাম্পকে বাদ দিয়ে নতুন প্রার্থী নির্ধারণের দাবি উঠেছে। কিন্তু ট্রাম্প নিজের ওইসব মন্তব্যকে ‘লকার রুম আলোচনা’ বলে চালিয়ে দিয়েছেন। অবশ্য এ জন্য তিনি ক্ষমাও চেয়েছেন। আবার উল্টো সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের মীমাংসিত যৌন নির্যাতনের কাহিনী সামনে এনেছেন। তাকে ‘নারী নির্যাতনকারী’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
M | T | W | T | F | S | S |
---|---|---|---|---|---|---|
1 | ||||||
2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 |
9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 | 15 |
16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 | 22 |
23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 | 29 |
30 | 31 |