১০ মহররম আজ পবিত্র আশুরা। মুসলমানদের জন্য এ দিনটি শোকাবহের দিন, তাৎপর্যময়ও বটে। দীর্ঘ ঐতিহ্য ধরে রাখার লক্ষ্যে ভয়ভীতি উপেক্ষা করে প্রস্তুত রাজধানীর পুরান ঢাকার হোসনী দালান। এরই মধ্যে সব ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। গত বছরের অনাকাঙ্খিত ঘটনার পর হোসনী দালানকে ঘিরে বেশ কিছু নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে সব ধরণের ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান হোসেনী দালানের সুপারিনটেনডেন্ট এম এম ফিরোজ হোসেন। সব শেষ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সার্বিক প্রস্তুতি নেয়ার কথা তুলে ধরে ফিরোজ হোসেন বলেন, গত বছরের বোমা হামলার পর বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। পুলিশ আমাদেরকে যে ১০/১২টি নির্দেশনা দিয়েছে, সে অনুযায়ী সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। নিরাপত্তা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে এবং এছাড়া আমরা নিজেরা দফায় দফায় বসে পর্যালোচনা করেছি।
তিনি বলেন, নিরাপত্তা বিধানের জন্য পুলিশের নেয়া পদক্ষেপের সঙ্গে আমরা একমত হয়েছি। পুরো এলাকায় ৩২ সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সেগুলো সার্বক্ষণিক মনিটর করা হচ্ছে। এছাড়াও দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন।
গত বছরের পবিত্র আশুরায় তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় গভীর রাতে হোসেনী দালানে বোমা হামলা হয়। এতে দুজন নিহত ও শতাধিক লোক আহত হন।
এ ঘটনায় থানায় মামলা হলেও পরে এটি ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়। বোমা হামলায় জামায়াতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) ১৩ জন জঙ্গির জড়িত থাকার প্রমাণ পায় ডিবি। এদের মধ্যে তিনজন এরইমধ্যে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। বাকি ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।
হোসেনী দালানের সুপারিনটেনডেন্ট মামলা প্রসঙ্গে বলেন, গত বছরের বোমা হামলার কারণে আগের চেয়ে ভক্ত ও দর্শনাথীদের সংখ্যা কমলেও মানুষের মধ্যে ভয় কিছুটা হলেও কমেছে। পুলিশের সঙ্গে সব সময় আমাদের আলাপ আলোচনা হচ্ছে। তিনি বলেন, গত বছর যে মিছিলটা মধ্য রাতে করা হতো তা পরের দিন সকাল ১০ টার সময় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি শুধুমাত্র নিরাপত্তার কারণে।
সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে এম এম ফিরোজ হোসেন বলেন, আমাদের সবশেষ মিছিল হবে আজ ১২ অক্টোবর সকাল ১০টার সময়, শেষ হবে দুপুর ১২টার এবং এই মিছিলে প্রায় এক লাখ লোক জমায়েতের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
গত বছরের হামলায় অভিযোগপত্র দেয়ায় ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করে হোসেনী দালানের সুপারিনটেনডেন্ট বলেন, সব শেষে আপনাদের সহযোগিতায় আমরা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন করতে চাই।