বাবা মাকে সে আস্থা রাখার কথাও বলতেন তিনি। জঙ্গি আস্তানায় র্যাবের অভিযানে নিহত সন্দেহভাজন জঙ্গি আহসান হাবিব ছিলেন তার সংসারের প্রধান আশা-ভরসা।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির সম্মান তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আহসান হাবিবের বাড়ি নওগাঁর রানীনগর উপজেলার বেগুন গ্রামে। তার বাবা আলতাফ হোসেন নওগাঁ জজকোর্টে আইনজীবীর সহকারী হিসেবে কাজ করেন।
গত শনিবার গাজীপুর ও টাঙ্গাইলে সন্দেহভাজন দুটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের পর নিহত চার জনের ছবি প্রকাশ করে বাহিনীটি। এরপর লোকমুখে শুনে ছেলেন মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হন বাবা।
ঢাকাটাইমসকে আহসান হাবিবের বাবা বলেন, ‘আহসান আমার একমাত্র ছেলে। ওই প্রায় সময়ে আমাকে বলত পড়াশুনা শেষ করে চাকরি করবে। অন্য চাকরি যদি নাও পায় তাহলে শিক্ষকতা করবে। যদি তাও না হয় তাহলে ইংরেজি টিউশনি করেও মাসে প্রায় ৫০ হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।’
আহসানের বাবা বলেন, ‘ছেলেটা বলতো, টিউশনি করে হলেও আমি তোমার সংসারের হাল ধরব। তখন আমাদের কোন অভাব থাকবে না।’
আলতাফ হোসেন জানান. ২০১৫ সালের ৭ জুলাই ক্লাস করতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয় আহসান। এরপর তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ছেলে কোনো সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়েছিল কি না সেটা জানতেন না বাবা। তিনি জানান, ছেলে না ফেরায় সেদিনই রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তিনি (নম্বর-৩৬৫)। এর প্রায় দেড় বছর পর মঙ্গলবার রানীনগর থানার পুলিশ বাড়ি এসে ছেলের মৃত্যুর সংবাদ দেয় তাকে।
জানতে চাইলে রানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘গত বছর ছেলেটি নিখোঁজ হয়েছিল। তখন থেকেই তার বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছে।’
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার উপপরিচালক রইসুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে জানান, নির্বাচন কমিশনের কর্মীদের দিয়ে আহসান হাবিবের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। একই দিন শনাক্ত হয়েছে জয়পুরহারের কালাইয়ের আমিম এহসান অপুর পরিচয়ও। তবে বাকি দুই জনের নাম এখনও জানা যায়নি। তাদের আঙ্গুলের ছাপের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্রের ছাপের কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।