‘ইয়া হোসেন ইয়া হোসেন’ ধ্বনিতে বের হয়েছে ঐতিহ্যবাহী তাজিয়া মিছিল। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুরান ঢাকার হোসেনী দালানের ইমামবাড়া থেকে এই মিছিলটি বের হয়। দুলদুল ঘোড়াসহ আরও বেশ কিছু খাটিয়া ও গাড়ি নিয়ে এই মিছিলটি বকশীবাজার, লালবাগ, নিউমার্কেট হয়ে ধানমন্ডির ঝিগাতলা মোড়ে গিয়ে শেষ হবে। আর এরমধ্য দিয়ে পবিত্র মহররমের আনুষ্ঠানিকতাও শেষ হবে।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তায় বের হয় এই মিছিলটি।
হোসেনী দালানের বের হওয়ার প্রধান ফটকে সাদা তরল পদার্থ রাখা আছে। কেউ কেউ সেখান থেকে ওই তরল পদার্থ তুলে নিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে মাখছে। কী এই তরল পদার্থ এ সম্পর্কে মিছিলে অংশ নেয়া হাবিব নামের এক যুবক জানান, এটা দুধ। সহজে পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, এই দুধ কেউ কেউ তুলে খাচ্ছে, আমিও বোতলে করে একটু চেয়ে নিয়েছি। যেকোনো অসুখে এই দুধ মাখলে তা ভালো হয়ে যায়।
তাজিয়া মিছিল বের হয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরে আরেকটি দল ধ্বনি ঘোড়া নামের একটি ঘোড়া নিয়ে একটি মিছিল বের করে। এই মিছিলটি তাজিয়া মিছিলের সঙ্গে মিশে যাবে।
হোসেনী দালানের প্রধান ফটকে দেখা গেছে, কেউ কেউ মান্নত করে মুরগি কবুতর টাকা পয়সা রেখে যাচ্ছেন। সেখানে ছোট ছোট বাচ্চারা ওই কবুতর ও মুরগি নিতে চাচ্ছে। তবে ঢাকা সিটি করপোরেশনের এক নিরাপত্তাকর্মী তাদেরকে আশ্বাস দিয়ে বলছেন, আর কিছুক্ষণ অপেক্ষা কর, তোমাদের কবুতরের বাচ্চা দেয়া হবে।
তাজিয়া মিছিল বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হোসেনী দালান এলাকা থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কমতে শুরু করেছেন। তবে প্রধান ফটেকে এখনও বেশবিছু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যকে টহল দিতে দেখা গেছে। হাতে অস্ত্র ওয়াকিটকি ও ওয়ারলেস সেট নিয়ে তারা বেশ ব্যস্ত।
গত বছর আশুরার তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে ইমামবাড়ায় বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এতে একজন নিহত হন, আহত হন অনেকেই। সেজন্য এবার যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে তাজিয়া মিছিলকে ঘিরে। এছাড়া এবার তাজিয়া মিছিলের রীতিতে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। ধারালো অস্ত্র বহন নিষিদ্ধ করেছে পুলিশ।