বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে না পারলে ক্ষমতাসীনদের হাত থেকে কেউ রেহাই পাবে না বলে মন্তব্য করেছেন।সোমবার বিকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে শহীদ জেহাদের স্মরণসভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নিজেদের ভুলের কারণে অনেক জাতি মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে। আমরাও যদি সেরকম ভুল করি, নিজেরা সংগঠিত হতে না পারি, তাহলে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাওয়াটা অসম্ভব নয়।’তিনি বলেন, ‘২৬ বছর আগে একজন স্বৈরশাসকের হাত  থেকে মুক্ত হওয়া বাংলাদেশ এখন নতুন ফ্যাসিবাদী শাসকের কবলে। ফলে ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে বিএনপিকে কম মূল্য দিতে হয়নি।’বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘রক্তের প্রতিদান দিতে পারিনি। সঠিক লক্ষ্যে পৌঁছতে আমাদেরকে (বিএনপিকে) কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। তাই আগে নিজেদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে, তারপর জাতীয় ঐক্য। তাহলেই বর্তমান দানবকে সরানো সম্ভব হবে।’
এসময় ছাত্র,যুবকসহ নানা পেশার মানুষকে সরকারের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যখন থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের গুম-খুন, হামলা-হামলাসহ নানা নির্যাতনের খড়্গ নামে, তখন আমরা বলেছিলাম- এ খড়্গ অন্যদের ওপরেও নামবে। সেই আশংকাই সত্যি হয়েছে। সরকারের এ খড়্গ এখন এনজিওগুলোর ওপরেও নেমেছে।’
এনজিওর নিবন্ধন বাতিলসংক্রান্ত আইনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এখন সরকার এনজিওর ওপর চড়াও হয়েছে। এরা কাউকে ছাড়বে না। জাতীয় ঐক্য না হলে কেউ রেহাই পাবে না। তাই সবার মধ্যে বিদ্রোহ আসা উচিত।’বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে অকল্পনীয় আখ্যা দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১৯৯০ সালের বিশ্ব ও আঞ্চলিক রাজনীতি এবং প্রেক্ষাপট আর এখনকার প্রেক্ষাপট ভিন্ন।তিনি বলেন, ‘৯০ সালে জেহাদের মৃত্যু গোটা দেশে আগুন  জ্বেলে দিয়েছিল, সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। এখন সরকারবিরোধী আন্দোলনে এক হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ দিয়েছে, কিন্তু তাদের ব্যাপারে আবেগ সৃষ্টি করা যায়নি।’মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মানুষের মধ্যে প্রতিবাদ করার বোধ জাগ্রত করে দিতে হবে। মানুষই একমাত্র ভরসা। অন্য কেউ বিএনপিকে কিছু করে দেবে না।’তিনি আরও বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু তখনকার পরিস্থিতির কারণে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন হয়নি। ভূ-রাজনীতি নিজেদের পক্ষে আনা গেলে হয়তো সে বিজয় অর্জিত হতো।’বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশের ৯০ ভাগ মানুষ পছন্দ করে না। কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার হলো-  যে পৃথিবী গণতন্ত্রের কথা বলে তারা শেখ হাসিনাকে অপছন্দ করছে না। পার্শ্ববর্তী দেশ তাকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়গুলো বুঝতে হবে।’
নাজির উদ্দিন জেহাদ স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত এ সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন-  কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, খায়রুল কবির খোকন, নাজিম উদ্দিন আলম, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, ইশতিয়াক আহমেদ নাসির, জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, ডিএল’র সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি প্রমুখ

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031