৮০৪ জন মাদক ব্যবসায়ী চট্টগ্রাম-কক্সবাজারে ইয়াবার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের । তাদের মধ্যে ৭৬৪ জন বাংলাদেশি এবং ৪০ জন মিয়ানমারের নাগরিক। নিয়ন্ত্রণকর্মীর তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তাদের মধ্যে আছেন প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি, পুলিশ, আইনজীবী, চিকিৎসক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, নিয়ন্ত্রণকর্মীরা বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের স্থল ও নৌপথে অন্তত ৮০ পয়েন্ট দিয়ে পাচার করছে ইয়াবা। এ সম্পর্কে র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে অভিযান চালিয়ে আমরা এ বছর বিগত যে কোনো সময়ের চেয়ে সবচেয়ে বেশি ইয়াবার চালান আটক করেছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত বেশ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। বাকি যারা পলাতক আছে তাদের গ্রেফতারে প্রতিনিয়ত অভিযান চালানো হচ্ছে।’ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ৮০ পয়েন্ট দিয়ে অবাধে ঢুকছে ইয়াবার চালান। ব্যবসায়ীরা টেকনাফ ও শাহপরী দ্বীপের মধ্যবর্তী ১৪ কিলোমিটারের নাফ নদীর চ্যানেল ছাড়াও সেন্টমার্টিন উপকূলকে প্রধান রুট হিসেবে ব্যবহার করছে। মিয়ানমার থেকে আসা ইয়াবার এসব চালান দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাচারে জড়িত ৮০৪ জনের নাম পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। যার মধ্যে ৪০ জন মিয়ানমারের নাগরিক এবং ৭৬৪ জন বাংলাদেশি। মিয়ানমারের ৪০ নাগরিকের মধ্যে আছেন মংডু থানার গোনাপাড়ার রশীদ, সংসমার জোবায়ের আহমেদ, গোনাপাড়ার হারুন, সুদাপাড়া এলাকার আলী মোহাব, ফয়েজিপাড়ার মো. সৈয়দ, নাপিতের ডেইলর নুরু, গোনাপাড়ার জোহার, মগপাড়ার অং সং, আমতলা থানার আবদুল করিম, মৌলভী ছিদ্দিক আহমেদ, মহিবুল্লাহ, করিম, আবু আহম্মেদ, পোয়াখালীর কামাল, শফি, সাইদুল, শাহ আলম, বুজি জহির, ছোট বুজুগীর বিল এলাকার আবদুল মোতালেব, সাবেক নাসাকা সেক্টর-১-এর আবদুল গফুর, খায়নখালীর রশীদ, নাসাকা সেক্টর-৭-এর এলাকার ইব্রাহিম, মংডু থানার শফি, হেতেলাপাড়ার সাদেক, নয়াপাড়ার হামিদ হোসেন, ওই এলাকার সৈয়দুল আমিন, ইউসুফ, গজুবিল এলাকার কালা সোনা, আলম, ফয়েজিপাড়ার সৈয়দ করিম, একই এলাকার জয়নাল ওরফে জইন্যা, জুলাপাড়ার আসাদুল্লাহ, একই এলাকার হেফজুর রহমান, আরেফ আলী। এছাড়া বাংলাদেশিদের তালিকায় যারা রয়েছেন তাদের মধ্যে কক্সবাজারের একজন সংসদ সদস্য, তার ভাই-বোন, নিকট আত্মীয়, কাউন্সিলর ছাড়াও অনেকের নাম আছে। তালিকায় ৭ জন পুলিশ কর্মকর্তার নামও রয়েছে। এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘তালিকা থাকা বাংলাদেশি ৭৬৪ জন মাদক ব্যবসায়ী নিয়ন্ত্রণ করছে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ইয়াবার ব্যবসা। তারা ইয়াবা চোরাচালানে ব্যবহার করছে ছোট নৌকা, মাছ ধরা ট্রলার এবং মালবাহী ছোট জাহাজ। সাগরপথে একেকটি চালানে থাকছে ১০ লাখ থেকে ২০ লাখ ইয়াবা। এদের নতুন ট্রানজিট পয়েন্ট চট্টগ্রাম উপকূল। পতেঙ্গা, আনোয়ারা, কর্ণফুলীসহ নানা এলাকাকে ব্যবহার করা হচ্ছে ইয়াবা পাচারের ট্রানজিট পয়েন্ট হিসাবে। পরে এসব জায়গা থেকে নানা উপায়ে দেশের বিভিন্নস্থানে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে ইয়াবার চালান।’

সুত্র- বাংলাদেশ প্রতিদিন

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031