দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিজেরা সংগঠিত হতে না পারলে বিএনপির নাম মুছে যেতে পারে বলে আশঙ্কার কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, ‘নিজেরা যদি সংগঠিত হতে না পারি, কী করতে হবে সেটা যদি বুঝতে না পারি, আর এ কারণে যদি বিএনপি মানচিত্র থেকে মুছে যায় তাহলে  বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই।’

সোমবার বিকালে ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে এক আলোচনায় এ মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব। স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলনে নিহত নাজির উদ্দিন জেহাদ এর ২৬তম শাহাদৎ বার্ষিকী উপলক্ষে জেহাদ স্মৃতি পরিষদ এই আলোচনার আয়োজন করে।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকানোর লক্ষ্যে ২০১৩ সালের মাঝামাঝি সময় থেকেই আন্দোলনে যায় বিএনপি-জামায়াত। নির্বাচনের আগে আগে অনির্দিষ্টকালের অবরোধ ডাকে বিএনপি। ভোটের আগে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে হামলাও করে জোটের নেতা-কর্মীরা। তবে নির্বাচন ঠেকাতে পারেনি তারা।

এরপর সরকারের এক বছর পূর্তিতে ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে আবার চূড়ান্ত আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দেয় বিএনপি। তবে আবারও অনির্দিষ্টকালের অবরোধ ডেকে ব্যর্থ হয় বিএনপি। এরপর দলটি সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। এরপর থেকে বক্তৃতা বিবৃতি নিয়েই দিন পার করছে দলটি। বলার মতো কোনো কর্মসূচিই দিতে পারেনি দলটি।

বিএনপি নেতা আক্ষেপ করে বলেন, ‘আজ ছাত্রীর ওপর হামলা করা হয়, ছাত্রদলের এক হাজার নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়, অথচ ছাত্ররা রাজপথে নামে না। এ কোন বিস্ময়ের বাংলাদেশ।’

সরকারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশের মানুষই বিএনপির একমাত্র ভরসা। জনগণই বিএনপির শক্তি। তবে অন্য কেউ এসে বিএনপিকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে না।’

আন্দোলনে ব্যর্থতার কারণ

ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানের কারণেই ২০১৪ সালে সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপি চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করতে পারেনি বলে মন্তব্য করেন ফখরুল।  তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমরা চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করতে পারিনি।’

ফখরুল বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য ছাড়া গণঅভ্যুত্থান সম্ভব নয়।… আমাদের কৌশল নির্ধারণ করতে হবে, সাহস বাড়াতে হবে।’

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের কম মূল্য দিতে হয়নি। অনেক মূল্য দিয়েছি। হাজার হাজার নেতাকর্মীদের আমরা হারিয়েছি। কিন্তু আমরা এই বিষয়ে কারো মধ্যে আবেগ সৃষ্টি করতে পারিনি। তাই জাতীয় ঐক্যও গড়ে উঠেনি।’

বিএনপি চেয়ারপারনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, বিএনপি নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, শহীদ জেহাদের  বড় ভাই কে এম বশির প্রমুখ বক্তব্যে দেন।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031