সিলেট মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজার ওপর হামলার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে এবার ফরিদপুরে প্রায় একই ধরনের হামলা হয়েছে এক ছাত্রীর ওপর। তবে কলেজের অন্য শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা এগিয়ে আসায় রক্ষা পায় কলেজের মানবিক বিভাগের ওই ছাত্রী। একই সঙ্গে হামলাকারী দুই ছাত্রকে আটক করে পুলিশে দিলে তাৎক্ষণিক ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সরকারি কে এম কলেজ ক্যাম্পাসের সামনে এই ঘটনা ঘটে। হামলাকারী দুই যুবকের শাস্তি হলেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন কলেজের শিক্ষার্থীরা।
গত সোমবার সিলেটে সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজাকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলম। খাদিজা এখন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। কিছুদিন আগে রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের ছাত্রী রিশাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় রিশা।
দুটি ঘটনাই ঘটেছে প্রেমের দাবি প্রত্যাখ্যানের কারণে। খাদিজা বদরুলকে উপেক্ষা করায় তিনি তাকে হত্যার চেষ্টা করেন বলে আদালতে এরই মধ্যে জবানবন্দি দিয়েছেন।
ফরিদপুরের ঘটনাটিও ঘটে একই কারণে। পুলিশ জানায়, ফরিদপুর সরকারি কে এম কলেজের মানবিক বিভাগের ছাত্রী তুলি আক্তারকে প্রেমের প্রস্তাব দেন একই কলেছের ছাত্র সবুজ মাতুব্বর। এ সময় সবুজের বন্ধু সুজন মোল্লাও তার সঙ্গে ছিল। তুলি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে পকেট থেকে ছুরি বের করে তাকে আঘাত করার চেষ্টা করেন সবুজ ও সুজন।
বিষয়টি কলেজের শিক্ষক ও অন্য শিক্ষার্থীরা জানতে পেরে ওই দুই ছাত্রকে আটক করে অধ্যক্ষের কক্ষে আটকে রাখে। খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই শিক্ষার্থীর কাছ থেকে একটি অত্যাধুনিক ছুরি ও মোবাইল ফোন জব্দ করে।
পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পুরবী গোলদার সেখানে গিয়ে দুজকেই এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই দুই ছাত্রকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে।
কলেজের অধ্যক্ষ মোশায়েদ হোসেন ঢালি জানান, বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসের ভেতরে মানবিক বিভাগের ছাত্রী তুলি আক্তারকে প্রথম বর্ষের ছাত্র সবুজ মাতুব্বর প্রেমের প্রস্তাব দেয়। ছাত্রীটি তা প্রত্যাখ্যান করলে সবুজ তার বন্ধু দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সুজন মোল্লাকে নিয়ে মেয়েটির ওপর হামলা চালায়। বিষয়টি টের পেয়ে কলেজের অন্য ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকরা এগিয়ে গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার ও হামলাকারী দুজনকে আটক করে।
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্দেশ মোতাবেক সাজাপ্রাপ্ত বখাটে ওই দুই ছাত্রকে ফরিদপুর কারাগারে পাঠানো হয়।