অলরাউন্ডার নাসির হোসেনকে আরেক দফা অবিচারের শিকার হতে হলো। নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় বিপিএলের জন্য সাত দলের জন্য সাত আইকন ক্রিকেটার চূড়ান্ত করা হয়েছে সোমবার, এই অভিজাত তালিকায় নাম নেই নাসির হোসেনের। তার অবনম হয়েছে এবার। গত বছর তিনি ছিলেন আইকন ক্রিকেটার। এবারও তিনি থাকবেন, হয়তো আত্মবিশ্বাসও ছিল তার।
কারো অবনমন হতেই পারে।কিন্তু নাসিরকে বাদ দিয়ে আইকন খেলোয়াড় হিসেবে এমন একজনকে নেওয়া হযেছে, বছর জুড়ে যার ভয়াবহ রান খরা এবং সেটা এখনও চলছে। জাতীয় দল, ঘরোয়া ক্রিকেট কিংবা ‘এ’ দল, সবখানেই টানা শোচনীয় ব্যর্থ তিনি। বলা হচ্ছে সৌম্য সরকারের কথা। ব্যাটে ভয়াবহ রান খরা চললেও নাসিরকে ঠেলে ঠিকই আইকন খেলোয়াড় হয়েছেন এ ওপেনার! বিসিবির এমন সিদ্ধান্ত হতবাগ অনেকেই।
নাসিরকে টপকে আইকন খেলোয়াড় হতে পারেন না সৌম্য, পরিসংখ্যানই তো সে কথাই বলছে। দুই চারটে উদাহরণ দেই : ক’মাস আগে ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে ১২ ইনিংসে ৭৪.৪২ গড়ে নাসির করেছিলেন ৫২৮, স্ট্রাইক রেট প্রায় ৯৭। যা একজন ব্যাটসম্যানের কাছে খুবই কাঙিখত।ঠিক উল্টো অবস্থা ছিল সৌম্যের।এ টুর্নামেন্ট ১৫ ইনিংসে সাকুলে সৌম্য করেছিলেন ৩৪৯। গড় মাত্র ২৩.২৬। স্ট্রাইক রেট ৮৩.৬৯। যা একজন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের বেলায় একেবারেই বেমানান।
গত বছর ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত বিপিএলের কথাও যদি ধরা হয় সেখানেও সৌম্যের চেয়ে নাসির হোসেন ঢের এগিয়ে।১১ ম্যাচে নাসির করেছিলেন ১৯৩, ১৯.৩০ গড়ে। ১২ ইনিংসে সৌম্যের ব্যাট থেকে এসেছিল ১৭৭ রান, গড় ১৬.০৯।
এ সময়ে সৌম্যের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের চিত্রও রীতিমত ভয়াবহ। দেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে গত বছরের নভেম্বরে ব্যাট হাতে ছিলেন ফ্লপ। এশিয়া কাপে তার সর্বোচ্চ রান ৪৮। ভারতে অনুষ্ঠিত টি-২০ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল ২১। তার আগে এ দলের হয়ে ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে সফরেও ছিলেন সুপার ফ্লপ।
গত বছরের নভেম্বরে দেশের মাটিতে শেষবার জাতীয় দলের জার্সিতে খেলেছিলেন নাসির। কিন্তু এরপর থেকে ‘অজ্ঞাত’ কারণে অলরাউন্ডার নাসির হোসেন উপেক্ষিত। দেশের মাটিতে এশিয়া কাপে দলেই রাখা হলো না তাকে। টি-২০ বিশ্বকাপে চূড়ান্ত দলে থেকেও একাদশে জায়গা হয়নি।একের পর এক ব্যর্থ হওয়া সত্বেও টানা খেলে গেলেন মোহাম্মদ মিথুন, যার কিনা আর্ন্তজাতিক ক্রিকেট খেলার মতো মেধা নেই বলেই মনে করেন ক্রিকেট বোদ্ধারা।
এই আফগানিস্তান সিরিজেও চূড়ান্ত দলে আছেন নাসির। কিন্তু সেই আগের অবস্থা। তাকে সুযোগই দেওয়া হচ্ছে না। মানে তিনি দ্বাদশ ব্যক্তি। অথচ খেলানো হচ্ছে দীর্ঘ দিন ধরে টানা অফ ফর্মে থাকা সৌম্য সরকারকে।
এই সৌম্যকেই জোর করে বানিয়ে দেওয়া হলো বিপিএলের আইকন ক্রিকেটার। কিন্তু কোন যোগ্যতায়? যিনি নিজেই চলতে পারেন না, তিন দলকে চালাবেন কিভাবে?