চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন অজ্ঞাত রোগীদের অভিভাবক হিসেবে চট্টগ্রাম মেডিকেলে পরিচিতি সাইফুল ইসলাম নেসারকে সম্মাননা,চেক ও ‘মানবতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী’ উপাধি দিলেন ।
বৃহস্পতিবার(২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিনের শেষ কর্মদিবসে এই সম্মাননা অনুষ্ঠানে আয়োাজন করা হয়।
এসময় সাইফুল ইসলাম নেসারকে অজ্ঞাত রোগীদের মানবিক সাহায্য সহযোগিতা করায় ছবি সম্বলিত একটি ক্রেস্ট,৩০ হাজার টাকার চেক ও একটি উপহার প্যাকেট হাতে তুলে দেন জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন।
সম্মাননা পাওয়া নেসার বলেন,আমার সম্মাননা তখন সার্থক হবে যখন বাংলাদেশের অজ্ঞাত রোগী চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হবে না। দেশের প্রতিটি হাসপাতালে অজ্ঞাত রোগীর অভিভাবক হিসেবে কেউ থাকবে তখন সার্থক হবে।
তিনি আরো বলেন,যতবড় বিত্তশালী, মন্ত্রী-এমপির আত্মীয় স্বজন হোকনা কেন কোন একটি ট্রাজেডির স্বীকার হয়ে কেউ অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে আসলে সে অজ্ঞাত হিসেবে পরিচিত।
কান্নাজড়িত কন্ঠে নেসার বলেন,চিকিৎসার অভাবে ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়েছিলাম,কিডনি রোগে মারা যান বাবা।ছোটবেলায় আমার যা সামর্থ ছিল তা দিয়ে আমি হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরে বেড়ায়।সেই অনুভূতি থেকে অপেক্ষায় থাকি কোন অজ্ঞাত রোগী আসছে কিনা,আমাকে ডাকছে কিনা।
জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন বলেন,দীর্ঘ আড়াই বছর চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসক হিসেবে কাজ করেছি।চট্টগ্রামকে আমি মনে রাখবো।চট্টগ্রামে কোন দাওয়াত পেলে সবার আগে ছুটে আসবো।শেষ কর্মদিবসে মানবতার অনন্য দৃষ্ঠান্ত স্থাপনকারী নেসারকে সম্মাননা দিয়ে যাচ্ছি ।
তিনি আরো বলেন,আমাদের দেশে প্রতিটি সরকারী হাসপাতালে শত শত নেসারের জন্ম হোক।নেসার থেকে মানুষ কিছু শিক্ষা নেওয়ার জন্য তাকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।
নেসারের জন্য একটি ভিআইপি আইডি কার্ডের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে চিঠি পাঠানো হবে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।
চট্টগ্রামে সরকারী মেডিকেলে একটি অজ্ঞাত রোগীদের সেল গঠন করার জন্য সুপারিশ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে একটি চিঠি পাঠানোর কথাও জানান।
উল্লেখ্য,বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা দৈনিক ‘প্রথম আলো’র ফিচার পাতা ছুটির দিনে ১৭ সেপ্টেম্বর সংখ্যায় প্রতিবেদক বাদল সৈয়দ ছদ্মনামে সৈয়দ মোহাম্মদ আবু দাউদ একটি প্রতিবেদন লিখেন ‘অন্য রকম একজন’ শিরোনামে। যার নায়ক ছিলেন বেসরকারী কোম্পানী পোর্ট লাইন গ্রুপের চাকরিজীবী সাইফুল ইসলাম নেসার।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা.আজিজুর রহমান সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন,ডাক্তাররা গুটিকয়েক মানুষের চিকিৎসা করলেও সাংবাদিকরা তাদের লেখনীর মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের চিকিৎসা করেন।সম্মাননা অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন প্রতিবেদনটির রূপকার বাদল সৈয়দ,বাংলাদেশ মেডিকের এসাসিয়েশন(বিএমএ)চট্টগ্রাম সভাপতি ডা.মজিবুল হক,সদস্য ডা.ফয়সাল চৌধুরী,চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ডাক্তার নারায়ণ চন্দ্র,চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি কলিম সরোয়ার,সাধারণ সম্পাদক মহসিন চৌধুরী,সিইউজে সাধারণ সম্পাদক মো.আলী প্রমুখ।