মালয়েশিয়ার পুলিশ সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মালয়েশিয়ায় আটক বাংলাদেশি রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী নিজ দেশে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করছিলেন বলে তথ্য পেয়েছে । তার নাম আন্দালিব আহমেদ। গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলাকীদের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল।
গত ২ সেপ্টেম্বর আন্দালিকবে বাংলাদেশে ফেরত পাঠায় মালয়েশিয়ার পুলিশ। একটি অস্ত্র মামলায় তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে ফেনীর একটি আদালত।
মালয়েশিয়াভিত্তিক গণমাধ্যম দ্য স্টার অনলাইনের খবরে বলা হয়, ৩৭ বছর বয়সী আন্দালিব মালয়েশিয়ার বুকিট বিনটাং-এ অবস্থিত তার রেস্তোরাঁয় জঙ্গিদের সঙ্গে বৈঠক করতেন। তিনি গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান হামলার সঙ্গে জড়িত।
গত ১ জুলাই গুলশানের অভিজাত রেস্তোরাঁ হলি আর্টিজানে হামলা করে জঙ্গিরা ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে হত্যা করে। জিম্মিদের মুক্ত করার চেষ্টায় যাওয়া দুই পুলিশ কর্মকর্তাও নিহত জন জঙ্গিদের গুলি ও গ্রেনেডে।
পর দিন সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে নিহত হয় পাঁচ হামলাকারী রোহান ইমতিয়াজ, নিবরাস ইসলাম, মীর এ হায়াৎ কবীর, শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল ও খায়রুল ইসলাম পায়েল। অভিযানে মারা যান রেস্তোরাঁর শেফ সাইফুল চৌকিদারও।
এই অভিযানের পর পুলিশি তদন্তে হামলাকারীদের সঙ্গে বহির্বিশ্বের যোগাযোগের প্রমাণ মেলে। বিদেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা ও অস্ত্র সরবরাহের তথ্যও জানতে পেরেছে পুলিশ। বাংলাদেশ ১৪ লাখ টাকা গ্রহণ করেছেন, এমন এক জনকে শনাক্ত করার কথাও জানিয়েছে পুলিশ।
গুলশান হামলার নাটের গুরু হিসেবে শনাক্ত তামিম চৌধুরী গত ২৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জে জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযানে নিহত হয়েছেন। ২ সেপ্টেম্বর মিরপুরের রূপনগরে নিহত হন গুলশান হামলাকারীদের প্রশিক্ষক হিসেবে শনাক্ত জাহিদুল ইসলাম।
মালয়েশিয় দৈনিকের খবরে আরও বলা হয়, দেশটির পুলিশ জানিয়েছে, আন্দালিব বাংলাদেশে আরও হামলার পরিকল্পনা করছিলেন। মালয়েশিয়া থাকা বাংলাদেশের বিভিন্ন লোকদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করতেন তিনি।
মালয়েশিয়ার পুলিশ বলছে, আন্দালিব আহমেদ বাংলাদেশে একে-৪৭ রাইফেল চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। মালয়েশিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগসূত্র ছিল। গুলশানে হামলাকারী নিবরাস ইসলাম এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন।
আন্দালিব ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে ছিলেন। এরপর তিনি তুরস্কের ইস্তানবুলে চলে যান।
মালয়েশিয়ার পুলিশ প্রধান তান শ্রী খালিদ আবু বকর বলেন, ‘২ আগস্ট থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বুকিট আমান স্পেশাল ব্রাঞ্চ কাউন্টার টেররিজম ডিভিশন যেই চার জন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছিলেন তার মধ্যে আন্দালিব রয়েছেন।’
খালিদ আরও বলেন, ১৯ আগস্ট ঐ বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি ছিল। ২ সেপ্টেম্বর তাকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়।
পুলিশের বিশেষ অভিযানে আটক অন্যান্যরা হচ্ছেন, একজন নেপালের ব্যবসায়ী(৩৮), একজন মরক্কোর নাগরিক(২৬) এবং অন্য জন হচ্ছেন ৩৪ বছর বয়সী মালয়েশিয়ার এক নাগরিক। খালিদ বলেন, ‘ফেসবুকের মাধ্যমে ইসলামিক স্টেটস (আইএস)-এর প্রপাগান্ডা এবং আদর্শ প্রচার করতো মালয়েশিয়ার এই নাগরিক।’
ফেব্রুয়ারি ২০১৩ থেকে এখন পর্যন্ত ২৪০ জন জঙ্গিকে আটক করেছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ।