অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত মাত্র চারদিন আগে নিশ্চিত করলেও নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভের টাকা চুরির ঘটনায় সরকার গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার প্রকাশ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ।
সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে এ কথা জানান অর্থমন্ত্রী। তবে কেন এই প্রতিবেদন প্রকাশ হচ্ছে না তার কোনো ব্যাখ্যা দেননি তিনি। কেবল বলেন, ‘এখনই এই প্রতিবেদন প্রকাশ হচ্ছে না, এটি প্রকাশে বেশ সময় লাগবে।’
গত ১৮ সেপ্টেম্বর অর্থমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির প্রতিবেদন ২২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশ হবে। তবে নির্ধারিত সময়ের আগের দিন মন্ত্রী বলেন, ‘কবে প্রকাশ হবে বলতে পারছি না। এখন প্রকাশ করলে মামলা মোকদ্দমায় আমাদের ক্ষতি হবে। এ কারণে আমরা প্রকাশ করছি না।’
প্রতিবেদন প্রকাশের দিনক্ষণ জানিয়ে ১৮ সেপ্টেম্বর মুহিত জানান, তিন সপ্তাহের সফরে ২৪ সেপ্টেম্বর দেশের বাইরে যাবেন তিনি, তার দুই দিন আগেই এই প্রতিবেদন প্রকাশ হবে।
গত ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের মধ্যে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার সরিয়ে নেয়া হয় দুটি দেশে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় পাচার হওয়া দুই কোটি ডলার ব্যাংক থেকে ছাড় করাতে পারেনি হ্যাকাররা। তবে ফিলিপাইনে পাচার হওয়া আট কোটি ১০ লাখ ডলার ব্যাংক থেকে ছাড় করিয়ে জুয়ার আড্ডায় নিয়ে যায় হ্যাকাররা।
এই টাকার মধ্যে দেড় কোটি ডলার বাংলাদেশকে ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছে ফিলিপাইনের একটি আদালত। এই অর্থ এরই মধ্যে বাংলাদেশ পেয়ে গেছে, আর না পেলে দুই একদিনের মধ্যেই পেয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তবে বাকি সাড়ে ছয় কোটি ডলার উদ্ধার এখন পর্যন্ত অনিশ্চিত রয়ে গেছে।
ফেব্রুয়ারিতে এই চুরির ঘটনা ঘটলেও তা প্রকাশ হয় মার্চে। আর পুরো ঘটনা তদন্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিনকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি করে সরকার।
২০ এপ্রিল প্রাথমিক প্রতিবেদন এবং ৩০ এপ্রিল পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন অর্থমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন ফরাসউদ্দিন। সেদিনই অর্থমন্ত্রী প্রতিবেদনটি পড়ে দেখার পর তা প্রকাশের কথা জানান।
এরপর একাধিকবার শিগগির প্রকাশের কথা জানালেও তা প্রকাশ হয়নি। এ নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ক্ষোভও প্রকাশ করা হয়। এরপর অর্থমন্ত্রী গত ১৮ সেপ্টেম্বর রিজার্ভ চুরির প্রতিবেদন প্রকাশের দিনক্ষণ বেঁধে দেন।