কাশ্মীরে হামলা চালিয়ে ১৮জন ভারতীয় সেনাকে হত্যার পর ভারত ও পাকিস্তান কি যুদ্ধ পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে? ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সে হামলার জন্য পাকিস্তান-ভিত্তিক গোষ্ঠীকে দায়ী করছে ভারত। যদিও পাকিস্তান বরাবরই তা অস্বীকার করছে।
ভারতের সংবাদমাধ্যমের শিরোনামগুলো দেখলে একটি বিষয় পরিষ্কার তা হচ্ছে – এ হামলা নিয়ে ভারতের ক্রোধ এখন চরমে। এ হামলার সাথে জড়িতদের শাস্তি দেবার বিষয়ে প্রতিজ্ঞা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
কিন্তু ভারত কি পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধে জড়ানোর মতো অবস্থায় রয়েছে? বিশ্লেষণ করেছেন ভারতে বিবিসি’র সংবাদদাতা সৌতিক বিশ্বাস।
ভারতের অনেক রাজনীতিবিদ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেশ কড়া ভাষায় কথা বলছেন। পাকিস্তানকে ‘সমুচিত জবাব’ দেবার হুমকি দিচ্ছেন অনেকে।
বিজেপি’র একজন সিনিয়র নেতা রাম মাধব বলেছেন, “তথাকথিত কৌশলগত কারণে সহ্য করার সময় শেষ হয়ে গেছে।” ভারতের সাবেক সেনা কর্মকর্তারাও একই ধরনের মনোভাব পোষণ করছেন। তারা মনে করেন ভারতের পাল্টা আঘাত করা উচিত। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে পাল্টা আঘাত হানার জন্য ভারতের সামর্থ্য এবং গোয়েন্দা তথ্য আছে কিনা? অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ মনে করেন ভারতের সরকারগুলো সে ধরনের সামর্থ্য গড়ে তুলেছে বলে মনে হয়না।
পাকিস্তানের ভেতরে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে ভারত যেন হামলা চালায় সেজন্য সংবাদমাধ্যমে কথাবার্তা হচ্ছে। কিন্তু অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ভারতের জন্য এটা সহজ হবেনা কারণ পাকিস্তানের রয়েছে শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
ভারতের একজন নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিষয়ে বিশ্লেষক অজয় শুক্লা মনে করেন, নরেন্দ্র মোদি সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নানা রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে রাজনীতির মাঠ গরম রেখেছে। কিন্তু কোন সন্ত্রাসী হামলার বিপরীতে কড়া জবাব দেবার মতো সামরিক শক্তি এবং পরিকল্পনা তৈরি করেনি নরেন্দ্র মোদির সরকার।
এখন মনে হচ্ছে সরকার তার নিজের বাগাড়ম্বরের মধ্যেই আটকা পড়ে গেছে।
মি: শুক্লা বলেন, “নিজেদের বাগাড়ম্বরের মধ্যে আটকে পড়ার বিপদ হচ্ছে, এটা আপনাকে আগ্রাসী হতে বাধ্য করবে। কিন্তু সেখান থেকে পরিস্থিতি যে পর্যায়ে যাবে, তা মোকাবেলার জন্য আপনি পুরোপুরি তৈরি থাকবেন না।”