মা ও বাবাকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে ফরিদপুরে নতুন মডেলের মোটরসাইকেল কিনে না দেওয়ায় ফারদিন হুদা মুগ্ধ (১৭) নামে এক ছেলে  ।

দুর্ভাগা মায়ের নাম সিলভিয়া হুদা (৪০), আর বাবার নাম এটিএম রফিকুল হুদা (৪৮)। তারা জেলা শহরের কমলাপুর ডিআইবি বটতলা এলাকার বাসিন্দা। রফিকুল হুদা সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এটিএম শামসুল হুদার ছোট ভাই।

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টম্বর) বিকেল ৪টার দিকে মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটে। দগ্ধ রফিকুল ওরফে পিন্টু বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। একমাত্র সন্তানের দেওয়া আগুনে পুড়ে গেছে তার শরীরের প্রায় ৫০ শতাংশ।

দগ্ধ রফিকুল হুদার ভগ্নিপতি আকরাম উদ্দিন আহমেদ জানান, এ বছর ফরিদপুর জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মুগ্ধ তার বাবার কাছে নতুন মডেলের একটি মোটরসাইকেল দাবি করে। কিন্তু মোটরসাইকেল কিনে দিতে অস্বীকৃতি জানালে সে বাবার ওপর ক্ষুব্ধ হয়।

এক পর্যায়ে মুগ্ধ ঘরের মধ্যে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় মা-বাবার গায়ে। এতে রফিকুল হুদার শরীরের বিভিন্ন অংশ, সিলভিয়া হুদার পা কিছুটা পুড়ে যায়। পুড়ে যায় মুগ্ধর নিজের পায়ের কিছু অংশও।

তাদের উদ্ধার করে প্রথমে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে রফিকুলের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে ঢামেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সন্ধ্যায় তাকে ঢাকার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ১১টার দিকে ঢামেকের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালে রফিকুলের সঙ্গে থাকা আরেক ভগ্নিপতি গোলাম মাহমুদ মিডিয়াকে বলেন, শুক্রবার (১৬ সেপ্টম্বর) বিকেল ৪টার দিকে রফিকুলকে ঢামেকের আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, সিলভিয়াকে চিকিৎসা দিয়ে রিলিজ দেওয়া হয়েছে। মুগ্ধ তার মায়ের সঙ্গেই আছে।

রফিকুল ইসলামের ভাগ্নে ইফতেখার আলম বলেন, নতুন মডেলের মোটরসাইকেল কেনা নিয়ে মামা-মামীর সঙ্গে মুগ্ধর ঝগড়া চলছিল। হঠাৎই ঘরে থাকা পেট্রোল দিয়ে সে আগুন ধরিয়ে দেয় মামা-মামীর গায়ে। পরে সবাই দৌড়ে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।

ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছিমছাম সুন্দর তিনতলা একটি ভবনের দ্বিতীয় তলার একমাত্র সন্তানকে নিয়ে বসবাস করতেন রফিকুল-সিলভিয়া দম্পতি। ছেলেকে পাঁচ লাখ টাকার ইয়ামাহা ব্র্যান্ডের আর১৫ মডেলের একটি মোটরসাইকেল কিনে দেন তারা। সেই মোটরসাইকেলটি পরিবর্তন করে নতুন মডেলের মোটরসাইকেলের দাবি তোলে মুগ্ধ। এ নিয়েই মর্মান্তিক ঘটনাটি।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031