দেশে কাঁচা চামড়ার বাজারে সবকিছু স্বাভাবিক থাকার পরেও ধস নেমেছে।

সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, সিন্ডিকেট চক্রের কারসাজির কারণেই ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হয়েছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা।

চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত দেশে ৯০ লাখ কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ হয়েছে। তবে দেশের কোথাও কোনো ব্যবসায়ী চামড়া বিক্রি করে খুশি হয়েছেন বা লাভবান হয়েছেন এমন তথ্য তাদের কাছে নেই।

এবার রাজধানীতে প্রতি বর্গফুট চামড়ায় নির্ধারিত ৫০ টাকা দাম কার্যকর না করে নানা অজুহাত দেখিয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ১৫-২০ টাকা কম দরে চামড়া কিনেছেন আড়তদার ও ট্যানারি মালিকরা। ফলে মাঠ পর্যায়ে এক হাজার ২০০ টাকায় কেনা ২৫ বর্গফুটের একটি গরুর চামড়া ঢাকার আড়তে বিক্রি হয়েছে ৫০০-৬০০ টাকায়। যা গত বছরের চামড়া বিক্রির দামের থেকে অর্ধেক বা তার থেকেও কম।

এদিকে নিজেদের মূলধন হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন মাঠ পর্যায়ের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। অনেকে চামড়া ব্যবসা থেকে সরে গিয়ে বিকল্প ব্যবসারও চিন্তা করছেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল জানান, কোরবানির আগে ব্যবসায়ীরা প্রতি বর্গফুট চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল। সেই হিসেবের সাথে মিল রেখে আমরা বিভিন্ন এলাকা থেকে চামড়া কিনেছিলাম। কিন্তু আড়তদাররা লবণের দাম বেশিসহ নানা অজুহাত দেখিয়ে নির্ধারিত মূল্যের থেকে কম মূল্যে আমাদের কাছ থেকে চামড়া কিনেছেন।

ফলে আমরা মাঠে মারা যেতে বসেছি। চামড়া কিনতে আমরা যে মূলধন বিনিয়োগ করেছি- তাও আমরা তুলতে পারিনি। আগামীতে আমরা অনেকেই এ ব্যবসা থেকে সরে যাওয়ার চিন্তা করছি।

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের লোকসানের এই বিষয়টি স্বীকার করে কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের বড় সংগঠন বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হাজী মো. টিপু সুলতান বলেন, ঈদের দিন মধ্যরাতের আগ পর্যন্ত যারা (মৌসুমি ব্যবসায়ীরা) পোস্তায় চামড়া এনেছেন তারা মোটামুটি দাম পেয়েছেন। এরপর যারা লবণহীন চামড়া এনেছেন তাদেরকে সত্যিই বড় ধরনের লোকসানে পড়তে হয়েছে।

তবে আড়তদার, ফড়িয়া এবং বেপারীরা এবার নির্ধারিত দামেই চামড়া কিনেছেন। তাই সব খরচ বাদ দেওয়ার পরও আড়তদাররা এবার প্রতি পিস চামড়ায় একশত থেকে দেড়শত টাকা লাভ করতে পারবেন।

আড়তদারদের মতে, লবণের মূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে চামড়ার দাম কমাতে হয়েছে। তারা বলেন, গত বছর যে লবণ (প্রতিবস্তা) ৫৫০ টাকা বিক্রি হয়েছে এবার তা এক হাজার ৪০০ টাকা থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে কিনতে হয়েছে।

এদিকে চামড়ার দাম ঘোষণায় এবার লবণযুক্ত শব্দটি জুড়ে দেওয়ায় দেশে নির্ধারিত দামের চেয়ে অর্ধেক মূল্যে কাঁচা চামড়া বেচাকেনা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের মৌসুমী ব্যবসায়ীরা সাধারণত লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণ করেন না। জবাইকৃত পশু থেকে চামড়া সংগ্রহের পরই মৌসুমী ব্যবসায়ীরা স্থানীয় বেপারী ও আড়তদারদের কাছে ছুটে যান সেই চামড়া বিক্রির জন্য। লবণ দিয়ে সাধারণত আড়তেই ওই চামড়া সংরক্ষণ করা হয়।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031