নগরে ফেরার পথে তিন জেলাতে তিনটি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৭ জন স্বজনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ শেষে । আহত হয়েছেন ৩৫ জনের বেশি। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রতি বছরই ঈদের আগে বাড়ি যাওয়া বা ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় ব্যাপক প্রাণহানি হয়। এবার বাড়ি যাওয়ার পথে তেমন দুর্ঘটনা না হলেও ফেরার পথে গত বেশ কিছু প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটেছে। ঈদের পর দিন দুর্ঘটনায় সারা দেশে মারা যায় ১৫ জনের বেশি। বৃহস্পতিবার বেশ কিছু ঘটনায় মারা যায় অন্তত ১০ জন।
ঈদের ছুটির শেষে দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটির আগে একটি কর্মদিবস থাকায় নগরমুখী চাপ ছিল না এত দিন। কিন্তু শুক্রবার সকাল থেকেই গ্রাম বা মফস্বল থেকে ঢাকার পথে আসা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।
তবে এখনো ফিরতি স্রোত তৈরি হয়নি। আর মহাসড়ক এখনো অনেকটাই ফাঁকা। যানজট না দেখে অনেক ক্ষেত্রেই চালকরা গতিরসীমা মানছে না। আর এ কারণেই ঘটছে দুর্ঘটনা।
মাদারীপুরে চার জনের প্রাণহানি
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে রাজৈরের বড়ব্রিজ এলাকায় বাস ও স্থানীয়ভাবে মাহিন্দ্র নামে পরিচিত হিউম্যান হলারের সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন চার জন। আহত হয় আরও ১৫ জন। বেলা ১২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানানন, টেকেরহাট থেকে রাজৈরগামী তিন চাকার যান মাহিন্দ্রটির সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা ঢাকাগামী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে দুই জন ও হাসপাতালে নেয়ার পর আরও দুই জন মারা যান।
রাজৈর থানার উপপরিদর্শক নাজমুল হোসেন জানান, আহতদেরকে রাজৈর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিহত আট
সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বাস ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে অন্তত আট জন নিহত হন। আহত হয় আরও তিন জন। নিহতরা সবাই মাইক্রোবাসের যাত্রী। সকাল সোয়া ১০টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বিজয়নগরের ইসলামপুর এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিশ্বরোড হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, মাইক্রোবাসে মোট ১১জন যাত্রী ছিলেন। তারা সিলেট থেকে ঢাকার পথে যাচ্ছিলেন। ইসলামপুর এলাকায় ঢাকা থেকে মৌলভীবাজার এনা পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসটির সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মাইক্রোবাসের সাত জন যাত্রী নিহত হন। আহতদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে পরে মারা যান আরও একজন। আরও একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
নিহতদের মধ্যে দুই জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন মৌলভীবাজার জেলার রূপসপূর গ্রামের কামরান হোসেন ও তার ছোট ভাই তারিকুল ইসলাম।
টাঙ্গাইলে নিহত পাঁচ
শুক্রবার ভোরে টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গিয়ে মারা যান পোশাক কারখানার পাঁচ শ্রমিক।
পুলিশ জানায়, নিহতরা হলেন, আসমা বেগম, মমিনুল ইসলাম, রিপন, ১২ বছর বয়সী আসাদুল হাবিব ও সুমন। তারা সবাই ঈদের ছুটি কাটিয়ে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থেকে গাজীপুরে কর্মস্থলে ফিরছিলেন।
অতিরিক্ত গতির কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা। একজন জানান, বাসটি ধীরে চালাতে বারবার চালককে বলছিলেন তারা, কিন্তু কিছুতেই কথা শুনছিলেন না তিনি। ভোরের দিকে হঠাৎ বাসটি দুলে উঠে। এক পর্যায়ে উল্টে যায় সড়কের ধারে।
দুর্ঘটনার পর পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ উদ্ধার করে আহত ২০ জনকে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করা করে। আহতদের মধ্যে অন্তত দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে পুলিশ।